• সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ

    আড়তে আলু সরবরাহ বন্ধ, খুচরায় প্রভাব

     

    নগরে সবজির বড় পাইকারি বাজার রেয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তে গত পাঁচদিন ধরে আলু সরবরাহ করছেন না মুন্সীগঞ্জের বেপারীরা। এছাড়া মধ্যম চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, কামাল বাজার, পাহাড়তলী বাজার, স্টিল মিল এলাকার আড়তেও আসছে না আলু।


    এ অবস্থায় খুচরা বাজারে দামে প্রভাব পড়েছে। ক্রেতাদের প্রতিকেজি আলু কিনতে হচ্ছে ৪৫ টাকায়।

    দাম লাগামহীনভাবে বাড়তে থাকায় সরকার খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা এবং হিমাগার পর্যায়ে ২৬ থেকে ২৭ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। তবে ব্যবসায়ীরা এ দাম না মেনে হিমাগার পর্যায়ে ৩৯ থেকে ৪০ টাকা এবং খুচরা বাজারে ৪৫-৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছেন।
    বাড়তি দামে আলু বিক্রির প্রমাণ পাওয়ায় নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত। বুধবারও পাহাড়তলী বাজারের মেসার্স লাকি স্টোর নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।  

    রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তদাররা জানান, সরকার আলুর দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পর উত্তরবঙ্গের হিমাগারগুলোতে অভিযান চালানো হয়। এরপর গত শনিবার ৭-৮ গাড়ি আলু এসেছে। রোববার থেকে পুরোপুরি আলু সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে এখানে প্রতিদিন ৩০ গাড়ি আলু আসে। প্রতি গাড়িতে ২০০-২৫০ বস্তা আলু থাকে।

    রেয়াজউদ্দিন বাজার আড়তদার কল্যাণ সমিতির সভাপতি রশিদ আহাম্মদ বলেন, অভিযানের ফলে মুন্সিগঞ্জের বেপারীরা রেয়াজউদ্দিন বাজারে আলু সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। এতে আড়তদার ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বন্ধের উপক্রম হওয়ায় আর্থিকভাবে যেমন ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে তেমনি সংশ্লিষ্ট শ্রমিক-কর্মচারীরা বেকার হয়ে পড়েছে।

    সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক শিবলী বলেন, এক শ্রেণির অসাধু মুনাফাখোর ব্যবসায়ী সরকারের নির্ধারিত মূল্যে আলু বিক্রি না করে মুন্সিগঞ্জের কোল্ড স্টোরে আলু মজুদ করে রেখেছে। ভোক্তা অধিকারের অভিযান শুধুমাত্র রেয়াজউদ্দিন বাজারের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে চট্টগ্রামের অন্যান্য স্থানে পরিচালনা করা হলে আলু সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। কারণ কতিপয় বেপারি রেয়াজউদ্দিন বাজারে আলু সরবরাহ না করে অধিক মুনাফার আশায় উল্লেখিত বাজারসমূহে আলু সরবরাহ করছে। গত পাঁচদিনে আড়তদারদের ক্ষতি হয়েছে ৫০ লাখ টাকার বেশি। বুধবার মুন্সিগঞ্জে হিমাগার থেকে আলু বিক্রি শুরু হয়েছে বলে খবর পেয়েছি।

    নগরের চাক্তাই, কামাল বাজার এলাকার আড়তেও সরবরাহ কমে যাওয়ায় আলুর সংকট দেখা দিয়েছে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে আলু কিনলে খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রি করতে হবে। এতে জরিমানার ভয়ে অনেকেই আলু বিক্রি করছে না।

    জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নাসরিন আক্তার জানান, নিত্যপণ্য নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় সব বাজার-আড়তে অভিযান পরিচালনা করছে। এখানকার একশ্রেণির আড়তদার ইচ্ছাকৃতভাবে অধিক মুনাফার আশায় বেশি দামে বিক্রি করছে।

    তিনি জানান, মুন্সীগঞ্জ থেকে ২৭ টাকা দরে কেনা আলু চট্টগ্রামের বাজারগুলোতে এসে ৩৯ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এমন প্রমাণ পাওয়ায় পাহাড়তলী বাজারের প্রতিষ্ঠান মেসার্স লাকী স্টোরের মালিক হাবিবুর রহমানকে ১ লাখ টাকা জরিমানা ও সতর্ক করা হয়েছে।
    প্রকাশিত বৃহস্পতিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩