• সর্বশেষ আপডেট

    শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা: আরেক মামলার চার্জ গঠন


    সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় অস্ত্র আইনে মামলার চার্জ গঠন হয়েছে। সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩-এর বিচারক বিশ্বনাথ মণ্ডলের আদালতে ৪৯ জন আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয়। এ সময় তালা-কলারোয়ার বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৪০ জন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আগামী ২৯ জুন মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।

    মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সকাল ১০টায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ধর্ষণের শিকার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসেন। সেখান থেকে যশোরে ফেরার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়। এ সময় শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। বোমা বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। হামলায় তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মতিন, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী সাথী ও সাংবাদিকসহ কমপক্ষে এক ডজন দলীয় নেতাকর্মী আহত হন।

    সাবেক এমপি হাবিবসহ সব আসামির সাজা

    এ ঘটনায় থানা মামলা না নেওয়ায় ওই বছরের ২ সেপ্টেম্বর কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেমউদ্দিন বাদী হয়ে যুবদল নেতা আশরাফ হোসেন, আব্দুল কাদের বাচ্চুসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭০-৭৫ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। মামলায় ১৮ জনকে সাক্ষী করা হয়। বিভিন্ন আইনি লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে ২০১৩ সালের ১৮ জুলাই হাইকোর্ট নিম্ন আদালতে মামলার কার্যক্রম নতুন করে শুরুর নির্দেশ দেন। 

    পরে মুখ্য বিচারিক হাকিম নিতাই চন্দ্র সাহা ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য কলারোয়া থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। ২০১৫ সালের ১৭ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কলারোয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুর রহমান ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে অভিযোগটি তিনটি ভাগে ভাগ হয়ে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এসটিসি ২০৭/১৫ (অস্ত্র), এসটিসি ২০৮/১৫ (বিস্ফোরক দ্রব্য) মামলা দুটি বিচারাধীন।   

    ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি অপর মামলাটির (টিআর ১৫১/১৫) রায় দেন সাতক্ষীরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। ওই রায়ে আসামি ৫০ জনের চার থেকে ১০ বছর মেয়াদে সাজা হয়। এরমধ্যে আসামি মাহাফুজুর রহমান সাবু কারাগারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গত ২৪ এপ্রিল বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেও কারাগার থেকে বের হওয়ার আগেই ২৫ মে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ জামিনাদেশ স্থগিত করেন।

    সাতক্ষীরা আদালতের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাড. আব্দুল লতিফ বলেন, অস্ত্র আইনের (১৯-এর ক্যাপিটাল-এ, ১৯-এর এফ ও ২৩ ধারায়) মামলার চার্জ গঠন হয়েছে। আমরা আদালতে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি, শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার সময় বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। আজকে অস্ত্র আইনে চার্জ গঠন করা হয়েছে। বিস্ফোরক আইনের মামলায় দু’জন সাক্ষী হাজিরা দিয়েছিলেন। দুটো মামলা একইসঙ্গে চলবে। আগামী ২৯ জুন সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে বলে জানান তিনি। 

    তিনি আরও বলেন, পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রে থাকা ৫০ জনের মধ্যে একজন মারা গেছেন। ৯ জন আসামি পলাতক রয়েছেন। বাকি ৪০ জন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

    প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার ১৬ জুন ২০২২