• সর্বশেষ আপডেট

    ‘গায়েবি কান্না’র রহস্য উদ্ধার করল পুলিশ


    নির্মাণাধীন একটি আবাসিক প্রকল্প থেকে প্রায়ই ভেসে আসে গায়েবি কান্নার শব্দ। অনেক চেষ্টা করে খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছিল না গায়েবি সে শব্দের উৎস। চাওয়া হয়ে পুলিশের সহায়তা। এরপর দুই রাত পাহারা দিয়ে পুলিশ বের করে সে শব্দের উৎস। ঘটনাটি মিরপুরের নির্মাণাধীন একটি আবাসিক প্রকল্পকে ঘিরে।

    জানা গেছে, মিরপুরের একটি প্রকল্প থেকে প্রায়ই ভেসে আসত কান্নার শব্দ। আশপাশের বাড়ির বাসিন্দারা এই ‘গায়েবি কান্নার’ উৎস না পেয়ে বিষয়টি ‘বাংলাদেশ পুলিশ ফেসবুক পেজ’– খুদে বার্তা দিয়ে জানায়। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়ে অভিযানে নামে বাংলাদেশ পুলিশ।

    এরপর মিরপুর মডেল থানা গায়েবি শব্দের উৎস খুঁজতে গিয়ে জানতে পারে, এক বাবা তার দুই ছেলেকে নিয়মিত মারধর করেন। সেই কান্নার শব্দই শুনতে পান আশপাশের লোকজন। অভিযুক্ত বাবা বাবা মো. জাহাঙ্গীরকে শুক্রবার (০৭ মে) আটক করা হয়। 

    মো. জাহাঙ্গীরের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশনে। তিনি মিরপুর ২ নম্বরের বি ব্লকের ২ নম্বর সড়কে ওই আবাসিক প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে আছেন। দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে তিনি সেখানে বসবাস করেন। সন্তানদের বয়স যথাক্রমে ৭ ও ৯ বছর। পুলিশের কাছে আটক হওয়ার পর সন্তানদের আর মারধর করবেন না এমন মুচলেকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই তার সন্তান ও স্ত্রীরও।

    পুলিশ সদর দপ্তরের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের সহকারী মহাপরিদর্শক মো. সোহেল রানার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আবাসিক প্রকল্পের ভেতরে নির্মাণাধীন ও বর্তমানে পরিত্যক্ত একটি ভবনে পরিবার নিয়ে থাকেন জাহাঙ্গীর। নির্মাণাধীন প্রকল্পের পরিবেশটা বেশ ভুতুড়ে। এখানেই প্রতিদিন তিনি তার সন্তানদের হাত-পা বেঁধে মারধর করতেন। ছেলেদের কান্না শোনা যেত দূর থেকে।

    বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ফেসবুকে বার্তাটি পেয়ে সাদা পোশাকে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তাজিরুর রহমানকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। তার নির্দেশনায় থানার উপপরিদর্শক মো. নাজমুল হক ও মো. আবদুর রাজ্জাক পরপর দুই দিন রাতের বেলা সম্ভাব্য কয়েকটি ভবন ও আশপাশের এলাকায় খোঁজ নিয়ে রহস্যের জট খুলতে সক্ষম হন।

    এ প্রসঙ্গে ওসি মোস্তাজিরুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, সন্তানদের মারধরের অভিযোগে জাহাঙ্গীরকে আটক করা হয়। এরপর তার স্ত্রী ও দুই সন্তানও থানায় এসেছিল। তারা তাদের বাবার বিরুদ্ধে লিখিত কোনো অভিযোগ করেনি। সন্তানদের না পেটানোর জন্য বাবাকে বোঝানো হয়েছে। তিনিও আর কখনো মারধর করবেন না, এমন কথা দিয়েছেন।



    প্রকাশিত: সোমবার ১০ মে, ২০২১