• সর্বশেষ আপডেট

    করোনা সচেতনতায় চট্টগ্রামের লিও শাহদাতের ভিন্ন উদ্যেগ।


    কোভিড-১৯ ভাইরাস ইতিমধ্যে তার দ্বিতীয় ধাপের সংক্রমণ শুরু করেছে।লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। শীতে জ্বর,সর্দি,কাশি ও ঠান্ডা জনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় করোনা আরো জেঁকে বসেছে।কিন্তুু মানুষের মাঝে সচেতনতা নেই বললেই চলে। রাস্তা, ঘাটে,হাঁট-বাজারে, অফিস-আদালতে এখন কেউ আর মাস্ককে তোয়াক্কা করছে না।অথচ মাস্ক ব্যবহার সরকার বাধ্যতামূলক করেছে। লোকজনের এহেন অসচেতন দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে সচেতনতার লক্ষ্যে এক অন্য রকম প্রচারণার উদ্যোগ নিয়েছেন চট্টগ্রামের তরুণ সংগঠক লিও শাহাদাত হোসেন। তিনি  লিও ক্লাব অব চিটাগং লিবার্টি ও প্রথম প্রহর ফাউন্ডেশন  এর সহ সভাপতি। 

    করোনা ভাইরাস সচেতনতায় তিনি নিয়েছেন এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ।যেখানে মানুষ অসচেতনতায় ঢুবে আছে সেখানে তার সচেতনতার এই উদ্যোগ জনমনে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এবং প্রশংসাও কুড়িয়েছে।

    লিও শাহাদাত হোসেন রুবেল করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এর আঁচ বুঝতে পেরে সর্বপ্রথম নিজে সচেতন হয়েছেন এবং নিজের পরিবারের সকল সদস্যকে সচেতন করেছেন।সাথে সাথে তিনি নেমে পড়েন ব্যতিক্রমী এক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনে।তার অংশ হিসাবে লিও শাহাদাত হোসেন রুবেল সরকারের "নো মাস্ক, নো সার্ভিস" এর উপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

    "আতঙ্কিত নয়,সচেতন হোন,মাস্ক পড়ুন,নিরাপদ থাকুন" এমন দুটি স্লোগানে "No Mask,No Service " প্রজেক্ট হাতে নিয়েছেন তিনি।ছবির মতো ৫ হাজার স্টিকার ছাপিয়ে নিজ হাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান,হাসপাতাল,ক্লিনিক,ব্যাংক,বিমা অফিস,কর্পোরেট অফিসসহ অসংখ্য সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে তিনি তার তৈরিকৃত স্টিকার লাগিয়ে মানুষের মাঝে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা তিনি হাতে স্টিকার নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন নগরীর অলিতে গলিতে। বাস,টেম্পু,মিনি বাস,প্রাইভেটকার,এ্যাম্বুলেন্সসহ যানবাহনের পিছনে "নো মাস্ক,নো সার্ভিস" স্টিকার লাগিয়ে যাচ্ছেন এবং সেই সাথে লোকজনকে সার্জিক্যাল মাস্ক উপহার দিচ্ছেন।গত ২৮ নভেম্বর থেকে শুরু করা ক্যাম্পেইন বিজয়ের মাসজুড়ে চলবে বলে জানান লিও শাহাদাত।

    এদিকে তার এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন চট্টগ্রাম নগরীর শিক্ষিত ও সচেতন সমাজ।এ নিয়ে তরুণ সংগঠক আরাফাত এলাহী বলেন, যেখানে মানুষ মাস্কই পরছেনা সেখানে সচেতনতা সৃষ্টি করাতো ভাবাই যায়না।মানুষ এখন বিষয়টিকে একদম হালকাভাবে নিচ্ছে।ফলস্বরূপ আমাদের শহরে করোনা আক্রান্তের হার বাড়ছে।লিও শাহাদাত হোসেন যে উদ্যোগটি নিয়েছে এটি সত্যি প্রসংশার দাবিদার।তার এমন উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই। 

    এ বিষয়ে প্রথম প্রহর ফাউন্ডেশনের সভাপতি জিল্লুর রহমান শিবলী বলেন,আমরা সকলেই এখন উদাসীন।লিও শাহাদাত যেমন সচেতন হয়েছে তেমনিভাবে আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে মাস্ক পরিধানের কোন বিকল্প নেই। কেননা মানুষের সর্দি-কাশি থেকে হাঁচি বের হয়।এসময় জীবাণু অন্যের শরীরে প্রবেশ করে। যা থেকে করোনা সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ। তাই সকলকে সচেতন হতে হবে। লিও শাহাদাত হোসেন রুবেল এর এই মহৎ কার্যক্রমকে আমি স্বাগত জানাই। 

    নগরীতে কথা হয় আরেক নাগরিক ফখরুল ইসলাম সোহেল এর সাথে। তিনি তার মতামতে বলেন,শাহাদাত এর ক্যাম্পেইনটি আমাকে অভিভূত করেছে।শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে করোনার সেকেন্ড টার্ম শুরু হয়ে গেছে। মাস্ক পরিধান ও সচেতনতার সময় এখনই।তার এই উদ্যোগে মানুষের মাঝে সচেতনতাবোধ ফিরে আসবে বলে মনে করছি।
    শুধু তাই নয় লিও শাহাদাত হোসেন রুবেল এর এই ব্যতিক্রমী চিন্তাকে ডাক্তার, প্রকৌশলী,ব্যাংকার,চাকুরীজীবি, শ্রমজীবি সকলেই ইতিবাচক হিসাবে গ্রহণ করেছেন।

    এ নিয়ে উদ্যোক্তা শাহাদাত হোসেন রুবেল এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, পথে ঘাটে দেখছি কেউ মাস্ক পরিধান করছে না।মাস্ক ছাড়া এদিক ওদিক ঘুরাঘুরি করছে।যা আপনি আমি সকলের জন্য অনিরাপদ। সরকার মাস্ক ছাড়া ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করেছে এবং মাস্ককে বাধ্যতামূলক করেছে।তবুও যেন কারো কথা কানে যাচ্ছে না।তাই সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে সচেতনতামূলক বাক্য বিশিষ্ট  ৫ হাজার স্টিকার ছাপিয়ে নিজে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও যানবাহনে লাগাচ্ছি।পাশাপাশি মানুষকে মাস্কও উপহার দিচ্ছি। এটি আমার একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা মাত্র। আমি সকলকে মাস্ক পরিধান ও সচেতন হওয়ার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করছি।


    প্রকাশিত: বুধবার, ০২ ডিসেমম্বর, ২০২০