• সর্বশেষ আপডেট

    রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মতপার্থক্য বাড়ছে

     

    রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে মতপার্থক্য বাড়ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের। বাংলাদেশের প্রথম অগ্রাধিকার প্রত্যাবাসন। এজন্য একটি পাইলট প্রকল্প নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বলছে, রাখাইনে প্রত্যাবাসনের জন্য সহায়ক পরিবেশ নেই। আবার রোহিঙ্গাদের ঘিরে নতুন যে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়েছে সেটির বিষয়ে বাংলাদেশ সতর্ক সংকেত দিচ্ছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বক্তব্য, রোহিঙ্গাদের যেন নেতিবাচকভাবে দেখা না হয়।বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) এ বিষয়গুলো উঠে এসেছে ‘রোহিঙ্গা সংকট: কীভাবে প্রত্যাবাসন হবে’ এ সংক্রান্ত এক অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও বিভিন্ন দেশের সরকার এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার প্রত্যাবাসন। রোহিঙ্গা সমস্যার কারণে গোটা অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে পড়তে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, কক্সবাজার পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির।প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, জাতিসংঘ ও আসিয়ানের আগ্রহ হচ্ছে মিয়ানমারে স্বাভাবিক অবস্থা ফেরত আনা। কিন্তু বাংলাদেশে আশা করে তাদের এই প্রচেষ্টায় রোহিঙ্গাদের সমস্যা যেন অন্তর্ভুক্ত থাকে। তিনি বলেন, এটি একটি বড় ভুল হবে যদি রোহিঙ্গা  সমস্যাকে গুরুত্ব না দেওয়া হয় এবং শুধু মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতির দিকে নজর দেওয়া হয়।বিপরীতে জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত নয়েলিন হেইজার বলেছেন, রাখাইনে কোনও উন্নতি হয়নি। রোহিঙ্গারা যে কারণে পালিয়ে এসেছিল সেটিও দূর করা হয়নি। তিনি বলেন, রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা মিয়ানমারের কাজ। যাতে সব শরণার্থী সেখানে ফেরত যেতে পারে সেটি করার দায়িত্বও মিয়ানমারের।রোহিঙ্গা ও কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণকে সহায়তা দেওয়া জরুরি জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বোঝা বণ্টনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এগিয়ে আসা জরুরি।বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের প্রতিনিধি ম্যাকেঞ্জি রো তার বক্তব্যে বলেন, আমরা প্রথম থেকেই চেষ্টা করছিলাম মিয়ানমারের পরিস্থিতি ভালো করে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য। কিন্তু পাঁচ বছর পর দেখা গেছে এটি ব্যর্থ হয়েছে। মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতিতে এখন বা নিকট ভবিষ্যতে রোহিঙ্গাদের টেকসই, নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসন সম্ভব নয়। বাস্তবতা মেনে নিয়ে আমাদের এখন আলোচনা করতে হবে, বাংলাদেশে যেসব রোহিঙ্গা আছে তাদের কীভাবে মঙ্গল করা যায়।প্রতিবছর অস্থায়ী কাঠামো তৈরি করার বদলে স্থায়ী কাঠামো তৈরি করার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের দোষ দেওয়া বা তাদের খলনায়কে পরিণত করা বন্ধ করতে হবে।জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, মিয়ানমারে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রত্যাবাসন একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। বাংলাদেশ ও জাতিসংঘ সংস্থাগুলোর মধ্যে একটি মতপার্থক্য আছে এবং আমি নিশ্চিত এটা দূর করা সম্ভব।

    প্রকাশিত বৃহস্পতিবার ২৫ আগস্ট ২০২২