• সর্বশেষ আপডেট

    প্রশাসন নীরব? শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চবিতে


    চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) এক ছাত্রীকে হেনস্তার প্রতিবাদ ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কয়েক দফায় এ আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি প্রগতিশীল ছাত্র জোট ও ছাত্রলীগের একাংশ মানববন্ধন করেছে।


    বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয় প্রতিবাদ কর্মসূচি। পরে শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধু চত্বরের সামনে দ্বিতীয় দফায় প্রতিবাদ জানান। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার চত্বরে অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয় তাদের বিক্ষোভ কর্মসূচি।

    মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ জানাতে দেখা যায়। এ সময়- ভিসি যেখানে নারী, সেখানে অনিরাপদ কেন আমি?, নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই, নাম অবশ্যই প্রশাসনের জানা, তবে মামলা কেন অজ্ঞাতনামা এসব স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড লিখে প্রতিবাদ জানান তারা।

    এর আগে বুধবার (২০ জুলাই) রাতে চার দফা দাবি জানিয়ে আন্দোলন করেন ছাত্রীরা। তাদের দাবি গুলোর মধ্যে রয়েছে- ২৪ ঘণ্টা ক্যাম্পাসে ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। মেডিক্যাল ও আবাসিক হলে প্রবেশ ও বের হওয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা না রাখা। যৌন নিপীড়ন সেল ভেঙে নতুন কার্যকরী যৌন নিপীড়ন সেল গঠন করা এবং গঠিত সেলে বিচার নিশ্চিতের জন্য সর্বোচ্চ সময় থাকবে এক মাস। এক মাসে বিচার নিশ্চিত করণে ব্যর্থ হলে যৌন নিপীড়ন সেল নিজে শাস্তির আওতাভুক্ত হবে। চার কর্মদিবসের মধ্যে ছাত্রী হেনস্তায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ সময়ের মধ্যে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারলে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা পদত্যাগ করবেন। এছাড়া শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার বিষয়ে প্রক্টরিয়াল বডিকে লিখিত আশ্বাস দিতে হবে।

    মানববন্ধনে চবি ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী সৈয়দ ইমন বলেন, আমরা গতকাল রাতে ছাত্রীরা যে ৪ দফা দাবি জানিয়েছে সে দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রীর সঙ্গে যে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের বিষয়ে প্রশাসনকে নিশ্চয়তা দিতে হবে।

    চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো মেনে নেওয়া হয়েছে। আমরা তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই রাত ১০টার মধ্যে হলে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নিতে চেয়েছিলাম। তবে এখন তারা যেহেতু এরকম কিছু চায় না, তাই আমরাও এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছি। এছাড়া অভিযুক্তদের শনাক্তের বিষয়ে তদন্ত কমিটি কাজ করছে। কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তবে আগামী রোববার আমরা তাদের নাম পরিচয় এবং শাস্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাব। জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হবে।  

    এর আগে গত রোববার (১৭ জুলাই) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রীতিলতা হলের পাশে শারীরিক হেনস্তার শিকার হন এক ছাত্রী। ওই সময় তার সঙ্গে থাকা তার বন্ধুকেও মারধর করে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দিলে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
    প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার ২১ জুলাই ২০২২