• সর্বশেষ আপডেট

    টাকার মান কতটা কমলো?


    একদিকে মূল্যস্ফীতি ঠিক রাখতে বাধ্য হয়ে পণ্য আমদানি করতে হচ্ছে, অন্যদিকে আমদানি করতে গিয়ে ডলারের ওপর বাড়ছে চাপ। এই চাপ সামাল দিতে একদিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক, অন্যদিকে ব্যাংকারদের পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তাদেরও বিদেশ ভ্রমণ বাতিল করা হয়েছে। অর্থাৎ ডলার সাশ্রয়ী করতে নানামুখী তৎপরতার পরও যখন কাজ হচ্ছে না তখন বাধ্য হয়ে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমাতে হচ্ছে। 

    বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি ঠিক রাখতে চলতি মে মাসেই পাঁচ দফায় টাকার মান কমাতে হয়েছে।

    প্রথম দফায় দর বাড়ানো হয়েছিল ৯ মে। সেদিন ডলারের বিনিময় মূল্য ২৫ পয়সা বাড়িয়ে ৮৬ টাকা ৭০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। এর আগে ছিল ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা।

    সর্বশেষ সোমবার (৩০ মে) ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমেছে ১ টাকা ১০ পয়সা।

    এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, আজ থেকে আন্তঃব্যাংক লেনদেন হচ্ছে ৮৯ টাকা। আমদানি ও রফতানি বিল সমন্বয়ে বিসি দর নির্ধারণ হয়েছে ৮৯ টাকা ১৫ পয়সা, যা এযাবৎকালের সর্বোচ্চ দরবৃদ্ধি।

    বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর থেকে বিশ্বজুড়ে চাহিদা বাড়ায় পণ্যের দাম বাড়তে থাকে। ফলে বিশ্বের অনেক দেশের মতো ডলারের বিপরীতে দর হারাচ্ছে টাকা।

    বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এক বছর আগে অর্থাৎ গত বছরের মে মাসে প্রতি ডলার আন্তব্যাংকে বিক্রি হয়েছিল ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা দরে।

    ব্যাংক কর্মকর্তারা বলেছেন, ২৩ মে ডলারের বিপরীতে টাকার মান ৪০ পয়সা কমিয়ে আন্তব্যাংক লেনদেনে নির্ধারণ করা হয় ৮৭ টাকা ৯০ পয়সা। ১৬ মে টাকার মান ৮০ পয়সা কমিয়ে ডলারের দাম ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ হয়।

    ১৫ মে এক ডলা‌রে খরচ হয় ৮৬ টাকা ৭০ পয়সা। ১০ মে ছিল ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা ও ২৭ এপ্রিল ছিল ৮৬ টাকা ২০ পয়সা।

    বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল। এরপর আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলারের সংকট শুরু হয়, যা এখনও অব্যাহত আছে।

    ২০২১ সালের আগস্টের শুরুতেও আন্তব্যাংকে প্রতি ডলারের মূল্য একই ছিল। ওই বছরের ৩ আগস্ট থেকে বাড়তে বাড়তে গত বছরের ২২ আগস্ট প্রথমবারের মতো ডলারের দাম ৮৫ টাকা ছাড়ায়।

    চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি বেড়ে ৮৬ টাকায় পৌঁছে। এরপর ২২ মার্চ পর্যন্ত এ দরেই স্থির ছিল। ২৩ মার্চ আরও ২০ পয়সা বেড়ে ৮৬ টাকা ২০ পয়সায় দাঁড়ায়। ২৭ এ‌প্রিল বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সায়। ১০ মে বাড়ে আরও ২৫ পয়সা। সর্বশেষ ৩০ মে এক ধাক্কায় বেড়ে যায় ১ টাকা ১০ পয়সা।
    প্রকাশিত: সোমবার ৩০ মে ২০২২