• সর্বশেষ আপডেট

    দুমকিতে আ.লীগ-বিএনপির সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ৩০

      


    পটুয়াখালীর দুমকিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে পুলিশসহ ৩০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। শনিবার (০৫ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

     এ সময় উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের জিনিসপত্র ভাঙচুর করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।সংঘর্ষের সময় ইটের আঘাতে আহত দুমকি থানার কনস্টেবল দেলোয়ার হোসেনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

     আহত বিএনপির ১০ নেতাকর্মীকে পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্যরা দুমকি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় বিএনপির কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার বিক্ষোভ সমাবেশ ডেকেছিল উপজেলা বিএনপি। সকাল থেকে বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিএনপি। 

    এ সময় উপজেলা যুবলীগের ব্যানারে মিছিল নিয়ে এসে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষ লেগে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে পুলিশ। এ সময় পুলিশ কনস্টেবলসহ দুই পক্ষের ৩০ জন আহত হন। পরে বিএনপি কার্যালয়ের চেয়ার-টেবিলসহ বিভিন্ন আসবাব ভাঙচুর করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।পুলিশ জানিয়েছে, সংঘর্ষের সময় ছোড়া ইটের আঘাতে পুলিশ কনস্টেবল দেলোয়ার হোসেন আহত হয়েছেন।

     তাকে উদ্ধার করে দুমকি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বরিশাল হাসপাতালে পাঠান।বিএনপি নেতাদের দাবি, মিছিল নিয়ে এসে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ। হামলায় তাদের ২০-২৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহত উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মো. সালাউদ্দিন রিপন, মো. জাহিদুল হোসেন, মো. শাহারিয়ার হোসেন শাহাদাত, মো. নেছার মাহমুদ, খলিল আকন, আব্দুল খালেক হাওলাদার, মো. সানাউল্লাহ, মো. নিজাম উদ্দিন, শাহিন খান ও শাহরিয়ার হোসেনকে পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

     পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আকলিমা আফরোজ বলেন, আহত অবস্থায় ১০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলছে।দুমকি উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই সমাবেশের আয়োজন করেছিলাম। প্রথমে পুলিশ এসে সমাবেশে বাধা দেয়।

     কিছুক্ষণ পর মিছিল নিয়ে এসে আমাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তাদের হামলায় আমাদের ২০-২৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আমাদের কার্যালয় ভাঙচুর করেছেন তারা। আহত দুমকি উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মো. সালাউদ্দিন রিপন বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর করেছে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় রড দিয়ে পিটিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের আহত করা হয়। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।


    দুমকি উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম তুহিন বলেন, ‘জামায়াত-বিএনপির নৈরাজ্যের প্রতিবাদে মিছিল বের করেছিল যুবলীগ। ওই মিছিলে হামলা করেছিল বিএনপি। এতে আমাদের ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। বিএনপির সব ধরনের অপচেষ্টার দাঁতভাঙা জবাব দিতে মাঠে আছে যুবলীগ।’
    উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আকন সেলিম জানান, বিএনপির ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ সকল অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঠে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 
    দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুস সালাম বলেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। আহত পুলিশ সদস্য দেলোয়ার হোসেনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।

    প্রকাশিত: শনিবার ০৫ মার্চ ২০২২