• সর্বশেষ আপডেট

    দূর্নীতিবাজদের পেটে শরীফ উদ্দিনের চাকরি

     

    চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালনের সময় বড় বড় দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে মামলা করে আলোচনায় আসা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। আজ বুধবার এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, চাকরি বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৫৪(২)-তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মো. শরীফ উদ্দিনকে (উপসহকারী পরিচালক, পটুয়াখালী) চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো। তিনি বিধিমোতাবেক ৯০ দিনের বেতন এবং প্রযোজ্য সুযোগ-সুবিধা (যদি থাকে) পাবেন। এই আদেশ ১৬ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) থেকেই কার্যকর বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।চাকরি থেকে অপসারণের চিঠি পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন মো. শরীফ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমার প্রতি অন্যায় হয়েছে। দুদকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এ রকম কোনো কাজ করিনি। সূত্র জানায়, শরীফ উদ্দিন চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালনের সময় সাবেক মন্ত্রীপুত্র, নির্বাচন কমিশনের পরিচালক, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), রেলওয়ের সাবেক মহাব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত ও মামলা করেছেন। গত ১৬ জুন তাঁকে পটুয়াখালী বদলি করা হয়।সূত্র জানায়, শরীফের করা তদন্তে কেজিডিসিএলের সাবেক এমডি আইয়ুব খান চৌধুরীর দুই ছেলে আশেক উল্লাহ চৌধুরীকে ডেপুটি ম্যানেজার পদে ও অপর ছেলে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। দুটি নিয়োগের ক্ষেত্রেই দুর্নীতি ও জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া হয় বলে শরীফের তদন্তে উঠে আসে। এদিকে দুদকের ছাড়পত্র গোপন ও অনিয়মের মাধ্যমে কেজিডিসিএলে মধ্যরাতে ৬২ জনকে পদোন্নতি দেওয়া হয় বলেও শরীফের তদন্তে উঠে আসে। এ ছাড়া বিভিন্ন গ্রাহকের বকেয়ার কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পরও অবৈধভাবে পুনঃসংযোগ দেওয়ার তথ্যও উঠে আসে শরীফের তদন্তে। কিন্তু শরীফের বদলির পর দৃশ্যপট পাল্টে যায়। এসব বিষয়ে আবার তদন্ত করেন চট্টগ্রামের উপপরিচালক মাহবুবুল আলম ও উপসহকারী পরিচালক আব্দুল মালেক। তাঁরা আইয়ুব খান চৌধুরীর নিয়োগ ও ৬২ কর্মকর্তার পদোন্নতিতে কোনো অনিয়ম খুঁজে পাননি। আইয়ুব খান চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের সত্যতাও পাননি। এমনকি অবৈধভাবে গ্যাস-সংযোগের সত্যতাও খুঁজে পাননি তাঁরা। ৫ পৃষ্ঠার এই তদন্ত প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করেছেন দুদক চট্টগ্রামের পরিচালক মাহমুদ হাসান, যা গত ১৩ জানুয়ারি দুদক মহাপরিচালকের দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে।

    সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী বলেন, ‘শরীফ বড় বড় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এই জন্য কী তাঁকে অপসারণ করা হলো। রাঘববোয়ালদের পেছনে দৌঁড়ে তিনি চাকরিটাই হারালেন। এতে তো দুদকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হলো।’


    প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২