• সর্বশেষ আপডেট

    সৌদিতে বাংলাদেশির কারাদণ্ড: আইনজীবী নিয়োগে টাকা দিচ্ছে কল্যাণ বোর্ড

      


    বাংলাদেশি যুবক মো. আবুল বাশারকে গত  ২৬ সেপ্টেম্বর মাদক দ্রব্য আইনে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে সৌদি আরবের একটি আদালত। দেশটিতে প্রবেশের সময় তার ব্যাগে ইয়াবা পাওয়ায়  এই সাজা দেওয়া হয়। তবে অভিযোগ রয়েছে, সেই ইয়াবা তার ব্যাগে ‘আচারের প্যাকট’ বলে  ঢুকিয়ে দেন বিমানবন্দরে পরিচ্ছন্নতার কাজে নিয়োজিত এসআর সুপারভাইজার নুর মোহাম্মদ।

    এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানিয়েছিল জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট। সেজন্য আইনজীবী নিয়োগে অর্থ ছাড় দিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

    জেদ্দা কনস্যুলেট সূত্রে জানা যায়, এর আগে আইনজীবী নিয়োগের বিষয়ে ঢাকায় চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয়,  আবুল বাশারের পক্ষে যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত-যুক্তি আপিল আদালতে নির্ভুল ও যথাযথভাবে উপস্থাপনের জন্য একজন সৌদি আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। একজন নির্দোষ ব্যক্তি যেন অযথা ভুক্তভোগী না হন এবং ভুল বিচারপ্রাপ্তির আশঙ্কা যথাসম্ভব প্রতিরোধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা হিসেবে আইনজীবী নিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের কথা ঢাকায় চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানায় জেদ্দার বাংলাদেশ কনস্যুলেট। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ অক্টোবর ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড ৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা অর্থ ছাড় দিয়ে চিঠি পাঠায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটের লেবার উইং বরাবর।

    ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের উপপরিচালক মো. জাহিদ আনোয়ারের সই করা চিঠিতে বলা হয়, 

    অ্যামফিটামিন বহনের অভিযোগে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মী  আবুল বাশারকে সৌদি আরবের আদালত ২০ বছরের কারাদণ্ড দিযেছে। তাকে মুক্ত করার লক্ষ্যে আদালতে আপিল শুনানিতে আইনজীবী নিয়োগের জন্য কন্স্যুলেটের চাহিদা অনুযায়ী,  ৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ২০২১-২২ অর্থবছরের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড হতে দূতাবাসের অনুকূলে ‘আইনগত সহায়তা বাবদ খাতে’ বরাদ্দকৃত বাজেট হতে কতিপয় শর্ত সাপেক্ষে  ব্যয়ের অনুমোদন দেওয়া হলো।’

    জেদ্দার বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কর্মকর্তারা জানান, বাশারের বিরুদ্ধে মাদক মামলায় ২০ বছরের সাজা দেন সৌদির আদালত। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখপূর্বক বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করার জন্য কনস্যুলেটের পক্ষ থেকে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নোট ভারবাল এবং মক্কার সোমাইশীতে সামারি কোর্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হয় এবং কনস্যুলেটের পক্ষ হতে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

    এর আগে দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানান,  ২০ বছর সাজা ঘোষণার পর এক মাসের মধ্যে আপিল করার সুযোগ আছে। বাশারের জন্য আপিল করার প্রস্তুতি নিয়েছে কনস্যুলেট। এজন্য ঢাকা থেকে প্রকৃত দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশে দায়ের করা মামলার এজাহার এবং এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের (এপিবিএন) কাছ থেকে বিশেষ প্রতিবেদন সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া এই ঘটনার আরও  প্রমাণ থাকলে তা পাঠিয়ে সহায়তা করার জন্য ঢাকায় চিঠি দেওয়া হয়।

    আবুল বাশারের মুক্তির জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদের সঙ্গে দেখা করেছেন তার স্ত্রী রাবেয়া। স্বামীকে মুক্ত করার জন্য লিখিতভাবে তিনি অনুরোধ জানান মন্ত্রীকে। সেই সময় মন্ত্রী তাকে সহায়তা করার আশ্বাস দেন। তখন মন্ত্রী বলেছিলেন,  আপিলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।


    প্রকাশিত: শনিবার ২৩ অক্টোবর ২০২১