• সর্বশেষ আপডেট

    মার্কেটে স্কুল ড্রেস কিনতে উপচেপড়া ভিড়

      



    ঈদ-পূজা-পার্বণ কিছুই নেই, তবুও রাজশাহী মহানগরীর বেশিরভাগ টেইলার্স ও ইউনিফর্মের দোকানে এখন উপচেপড়া ভিড়।  

    দীর্ঘ দেড় বছর পর দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে।

    শিক্ষার্থীদের বাড়ন্ত বয়স হওয়ায় ছোট হয়ে গেছে ইউনিফর্ম। আবার পুরাতন ইউনিফর্ম নোংরা হয়ে যাওয়া, নতুন ইউনিফর্ম কিনে দিতে এবার শিশুদের আবদার- ‘নতুন পোশাক চাই’।

    আর এমন নানান কারণে স্কুলে নতুন করে ফেরার জন্য নতুন পোশাক তৈরি করতে শহরের বিভিন্ন দোকানে ও টেইলার্সে ভিড় করছেন অভিভাবকরা। তাই অনুযায়ী পোশাক তৈরি করতে হিমশিম খাচ্ছেন টেইলার্সের কর্মচারীরা।

    টেইলার্সের কর্মচারীরা বলছেন, করোনার দীর্ঘ সময় স্কুলড্রেস তৈরি ও বিক্রি হয়নি। তবে সরকারের স্কুল-কলেজ খোলার দিন ঘোষণার পর থেকে দোকানে অভিভাবকরা হঠাৎ করেই ভিড় করছেন।

    ঈদের সময় যেমন ভিড় থাকে, এখন ঠিক তেমন ভিড় আছে। গত এক সপ্তাহ ধরে তারা সারা দিনরাত কাজ করছেন। তবুও কাজ শেষ হচ্ছে না। এছাড়া অনেকেই রেডিমেড প্যান্ট-শার্ট বিক্রি করছেন।

    সরেজমিনে দেখা যায়, মহানগরীর আরডিএ মার্কেট, নিউমার্কেটসহ আশেপাশের বিভিন্ন ছোট মার্কেটে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। আরডি মার্কেটের সুমন টেইলার্সের কর্মচারী ফরহাদ হোসেন শিক্ষার্থীদের শরীরের মাপ নিচ্ছিলেন।  

    তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে অনেক অভিভাবক আসছে তাদের সন্তানের জন্য স্কুলড্রেস বানাতে। তবে চাপ বেশি থাকায় আমার সবার অর্ডার নিতে পারছি না। প্রতিদিন সবমিলে এক হাজারের বেশি রেডিমেট ইউনিফর্ম বিক্রি হচ্ছে।

    ফয়সাল গার্মেন্টসের আরিফুল জানান, রেডিমেড স্কুলড্রেস প্রায় শেষ। এখন যারা আসছেন তাদের স্কুলড্রেস মাপ নিয়ে নতুন করে তৈরি করে দিতে হচ্ছে। চাপ অনেক বেশি। এমন চাপ সাধারণত ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে থাকে। কিন্তু করোনার কারণে সব স্কুল বন্ধ ছিল। যে কারণ এই দেড় বছর কেউ স্কুলড্রেস বানাতে আসেনি। হঠাৎ স্কুল-কলেজ খোলায় সেপ্টেম্বর মাসে ডিসেম্বর-জানুয়ারির মত চাপ পড়েছে। তার ব্যবসায়িক জীবনে এমন ঘটনা প্রথম বলেও জানান তিনি।
     
    এদিকে নিউ মার্কেটের ঢাকা টেইলার্সের কর্মচারী বেলাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘ দেড় বছরে অনেকেরই ইউনিফর্মের সাইজ ছোট হয়ে গেছে। কিছু ইউনিফর্ম হয়েছে ইঁদুরের খাবার। এমন নানা কারণে নতুন করে অভিভাবকরা স্কুলড্রেস বানাতে আসছেন। আমাদের টেইলার্সের প্রায় ১০ জন কর্মচারী রাত-দিন কাজ করছে। তবুও সবার অর্ডার নিতে পারছি না।  আরডিএ মার্কেট এলাকায় সাজেদুর রহমান একজন অভিভাবকের সঙ্গে দেখা হয়। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমার দুই সন্তান। একজন ক্লাস নবম ও আরেকজন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। বাড়ন্ত বয়স হওয়ায় দুজনই বেশ লম্বা হয়েছে। ফলে তারাপুর অন্য ড্রেস পরতে পারছে না। তাই নতুন করে ড্রেস তৈরি করাতে এসেছি। তবে কোন টেইলার্সে অর্ডার নিচ্ছে না। বাধ্য হয়ে রেডিমেড ড্রেস নিলাম। নতুন ড্রেস পেয়ে আমার বাচ্চারাও খুশি।

    আরডিএ মাকের্টে সিদ্দিক হোসেন নামের আরেক অভিভাবকের সঙ্গে দেখা হয়। তিনি  বলেন, আমার এক মেয়ে। তিনি ক্লাস সেভেনে পড়ে। তার ড্রেসে একটু দাগ পড়েছে। তাই নতুন ড্রেস ছাড়া আর স্কুলে যাবে না মেয়ে। তাই টেইলার্সের দোকানে এসেছি কিন্তু কেউ এক সপ্তাহের আগে ডেলিভারি দিতে পারবে না বলে জানাচ্ছে।

    রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী রাসেল আহমেদ  বলেন, দীর্ঘদিন পর কলেজে ক্লাস করতে যাবো। আগেও যে ড্রেস ছিলো তা নষ্ট হয়ে গেছে। তাই নতুন ড্রেস কিনতে এসেছি।


    প্রকাশিত: সোমবার ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১