• সর্বশেষ আপডেট

    যুদ্ধক্ষেত্রে আহত সৈনিকের মত ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশনে সফলতা অর্জন পার্কভিউ'র

                                     

    প্রায় ১১দিনের জ্বর আর ৫দিন ধরে শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত ১ আগস্ট পার্কভিউর কেবিনে ভর্তি হন ফেনী জেলার মোঃ আকরামুল হক (৫৫) নামের মুমূষুর্ এক রোগী, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কোনো কূল কিনারা খুঁজে না পাওয়া এমন রোগীর চিকিৎসায় সাহসী ভূমিকা দেখিয়েছে চট্টগ্রামের বেসরকারি পার্কভিউ হসপিটাল। ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশন করে আবারো বড় সফলতা অর্জন করল এই হসপিটালটি। আর এ সফল অপারেশনের নেতৃত্বে ছিলেন সার্জারি কনসালটেন্ট ডা. মোঃ আলমগীর ভূঁইয়া ও ডা. জিতু দাস গুপ্ত।  


    এমন সফলতার কাজটি হয়েছে  আজ বুধবার হাসপাতালের আইসিইউতে দুই ঘণ্টার অপারেশনের মধ্য দিয়ে চিকিৎসা ক্ষেত্রে এক অনন্য সফলতা অর্জন করলো চট্টগ্রামের এ হাসপাতাল।

    জানা যায়, প্রায় ১১দিনের জ্বর আর ৫দিন ধরে শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত ১ আগস্ট পার্কভিউর কেবিনে এক রোগী ভর্তি হন। যিনি সার্জন ও ইউরোলজিস্ট ডাক্তার আলমগীর ভূইয়ার জামাতা। শ্বাসকষ্টের চেয়েও বেশি ছিল তার তীব্র পেট ব্যাথা কিন্তু যার কোন কারণ বুঝা যাচ্ছিলনা। ২রা আগস্ট কোভিড টেস্ট পজিটিভ আসে। সম্ভাব্য সব পরীক্ষা, এমনকি সিটি স্ক্যানও করা হয় পেটের, কোভিড থাকায় শুধু এ্যান্ডোসকপি করা হয়নি। পেট ব্যাথার কোন উন্নতি না হওয়া এবং ধীরে ধীরে অক্সিজেন লেভেল কমতে থাকায় ২রা আগস্ট সন্ধ্যায় রোগীকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।


    এদিকে সন্তোষজনক কোন ডায়াগনসিসে পৌঁছাতে না পাড়ায় তীব্র পেট ব্যথার কুল কিনারা করা সম্ভব হচ্ছিলো না। রোগীর রক্তচাপ মারাত্মক লেভেলের কম, স্যাচুরেশন ৭৪—৭৮%, সিপ্যাপ সাপোর্টে ১০০লিটার/মিনিট অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছিল। ৩রা আগস্ট আরো কয়েকটা রিপোর্টের ফলাফল আসলো- কিডনি ঠিকমতো কাজ করছে না, ক্রিয়েটিনিন বেশি, প্রোক্যালসিটোনিন ২১.৪, যার মানে সিভিয়ার সেপসিস হয়েছে রোগীর, প্রো বিএনপি সাড়ে পাঁচ হাজার, যার অর্থ রোগীর হার্ট ফেইলিউর হয়েছে। ডাক্তাররা বুঝতে পারছিলো প্যাথলজি পেটে, কিন্তু কোন কনক্রিট এভিডেন্স নাই। রাত ১০টায় ডা. আলমগীর বললেন, “রোগী তো মরেই যাবে, আমরা কি একটু অপারেশন করে দেখতে পারি।

    এদিকে নরএ্যাড্রেনালিন হাইয়েস্ট ডোজে রোগী কোনরকমে ৮০—৯০ সিস্টলিক প্রেসার মেইনটেইন করছে, তার উপর ১০০লিটার অক্সিজেনে স্যাচুরেশন ৭৪। এরকম সিভিয়ার পেশেন্টের টেবল ডেথ ” অনেকটা নিশ্চিত বলা চলে। অপারেশন না করলেও মৃত্যু নিশ্চিত। এটা ছিল এক্সাইটিং চ্যালেঞ্জ, যেটার সমস্ত রিস্ক নিচ্ছে পেশেন্টের আপন শ্যালক ডা. মোঃ আলমগীর ভূঁইয়া ,যিনি নিজেই অপারেট করেন।

    ঠিক হলো অপারেশন আইসিইউতেই হবে। পাক্কা ২ঘণ্টার যুদ্ধ। পেট কাটা মাত্রই দেখা গেল অর্ধেক ইনটেসটাইন( নাড়িভূড়ি) পঁচে গেছে। ডায়াগনসিস ছিল: “Ischemic Necrosis of the gut due to hypercoagulopathy and micro embolus to superior mesenteric artery, অসাধারণ দক্ষতার সাথে পঁচা অংশ আলাদা করে ফেলে দিলেন। একটি সাকসেসফুল অপারেশন। সব ধরনের আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন অপারেশন থিয়েটারে যে অপারেশন করা কিংবা এ্যানেসথেসিয়া দেওয়া অনেকে সাহস করবেনা সেই অপারেশন আইসিইউর বেডেই করা হলো, তাও ভেন্টিলেটর, ইনটিউবেশন ছাড়াই।

    এম এ মেহেদি, দি/নি

    প্রকাশিত: বুধবার ০৪ আগস্ট, ২০২১