• সর্বশেষ আপডেট

    সংঘর্ষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্য দিয়ে চলছে চসিক নির্বাচন, নিহত ২ আহত অনেকে


    এম এ মেহেদিঃ ভোটের নিরাপত্তায় গত সোমবার থেকেই মাঠে নেমেছেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। নগর পুলিশের ৭ হাজার ২৫৯ সদস্যসহ আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর প্রায় ৯ হাজার সদস্য আজ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করছে।

    অতীত সহিংসতার ইতিহাস, প্রার্থীদের অবস্থান এবং বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এবার চসিক নির্বাচনে ৭২৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৪১৭টিকে (প্রায় ৫৮ শতাংশ) 'ঝুঁকিপূর্ণ' হিসেবে বিবেচনা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

    করোনাভাইরাসের কারণে  দীর্ঘ প্রায় ১০ মাস স্থগিত থাকার পর বুধবার অবশেষে অনুষ্ঠিত হচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন।

    সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নগরীর প্রায় সাড়ে ১৯ লাখ মানুষ ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দিয়ে তাদের নগর পিতা নির্বাচন করতে চলেছেন।

    নির্বাচনে আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম চৌধুরী (নৌকা প্রতীক) ও বিএনপির শাহাদাত হোসেন (ধানের শীষ) সহ মোট সাত মেয়র প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। তবে মূল প্রতিদ্বন্ধিতা রয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে।

    অন্য পাঁচ মেয়র প্রার্থীরা হলেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জান্নাতুল ইসলাম (হাতপাখা), এনপিপির আবদুল মঞ্জুর (আম), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এমএ মতিন (মোমবাতি), ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ (চেয়ার) এবং স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বী খোকন চৌধুরী ( হাতি)।

    এছাড়া ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৭২ জন কাউন্সিলর প্রার্থী এবং ১৪টি সংরক্ষিত আসনে ৫৭ জন মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।


    কাউন্সিলর প্রার্থীদের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর, প্রচারণায় হামলাসহ বেশকিছু ঘটনা ঘটেছে। ইতিমধ্য আওয়ামী লীগ সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে দু'জন নিহত আহত হয়েছে অনেকেই।

    সকাল সাড়ে দশটার দিকে নগরের পাহাড়তলীতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ওয়াসিম উদ্দিন ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী মাহমুদুর রহমানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আলাউদ্দিন নামে এক কর্মী নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষের পর বঙ্গবন্ধু বাংলা স্কুলে ভোটগ্রহণ প্রায় এক ঘন্টা স্থগিত ছিল।  

    এর আগে সকাল  নগরীর ১২নং পাহাড়তলী ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর দ্বন্দ্বে আপন ভাইয়ের হাতে খুন হয়েছেন নিজাম উদ্দিন মুন্না নামের এক ছাত্রলীগ কর্মী।  

    স্থানীয়রা জানায়, নিহত যুবক মুন্না ১২ নম্বর ওয়ার্ডের (সরাইপাড়া) আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী সাবের আহমদের কর্মী ছিলেন। তার ভাই হত্যাকারী সালাউদ্দিন কামরুল একই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী নুরুল আমিনের কর্মী।

     নির্বাচন নিয়ে দুইভাইয়ের মধ্যে কিছুদিন ধরে বিরোধ চলছিল। আজ সকালে ভোট শুরুর আগেই দুজনের মধ্যে তুমুল ঝগড়া শুরু হলে মুন্নাকে ছুরিকাঘাত এবং গলাকেটে হত্যা করে পালিয়ে যায় কামরুল। পুলিশ মুন্নার লাশ উদ্ধার করেছে। 


    এদিকে  বিএনপির নির্বাচনী এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন  চসিক নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। 

    বুধবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টায় পশ্চিম বাকলিয়া বিএড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার পর উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

    তিনি বলেন, আমার বাড়ির লোকজনকে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আড়াই ঘণ্টায় এ কেন্দ্রে ৩৩৬ ভোটের মধ্যে মাত্র ৯টা ভোট পড়েছে। ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে না আসার জন্য সব ধরনের কৌশল তারা নিয়েছে। 

    ডা. শাহাদাত বলেন, আমাদের দলীয় এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে।  সকাল ৯টার মধ্যে আমাদের ১৫ জন কর্মী আহত, গুলিবিদ্ধ ও ছুরিকাঘাতের শিকার হয়েছে।

    প্রকাশিত: বুধবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২১