• সর্বশেষ আপডেট

    ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয়ে বিশাল প্রতারণা


    কখনো ছাত্রলীগ নেতা, কখনো সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিগত সহকারী। এমন ভুয়া পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সরকারি দফতরে চাকরি দেয়ার 

    প্রলোভনে মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন ঢাকা কলেজের সাবেক ছাত্র মোজাম্মেল হক ইয়াসিন। পুলিশ বলছে ভুয়া পরিচয়পত্র, সিল, স্ট্যাম্প ব্যবহার করে অনেক জায়গায় চাকরি দিতে নানা তদবিরেও সফল হতেন মোজাম্মেল। কেরানীগঞ্জ থেকে তাকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ।

    মোজাম্মেল ঢাকা কলেজের সাবেক ছাত্র। ছাত্রলীগে তার কোনো পদ ছিল না। কিন্তু নিজেকে পরিচয় দিতেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে। ঢাকা কলেজে পড়লেও ফেসবুক আইডিতে উল্লেখ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

    ছাত্রলীগ নেতা থেকে ধীরে ধীরে ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে পরিচয় দিতে থাকেন মোজাম্মেল। বানিয়ে নেন ভুয়া পরিচয়পত্র ও সিল। ওবায়দুল কাদেরের সাক্ষর নকল করে ভুয়া সুপারিশের মাধ্যমে বিভিন্ন দফতরে বহু লোককে চাকরি দেয়ার প্রমাণও পেয়েছে পুলিশ। সম্প্রতি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি চাকরির সুপারিশপত্র পাঠালে সেখানকার কর্মকর্তাদের সন্দেহ হয়। পরে গোয়েন্দা পুলিশ বিভিন্ন প্রমাণসহ তাকে আটক করে।

    ডিবি অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সাইফুর রহমান আজাদ বলেন, 'স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে অফিস সহকারী নিয়োগ দেয়ার কথা বলে মাইন উদ্দিন নামে একজন আবেদন করেছে। ওই আবেদনে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সুপারিশ করে দিয়েছেন। আমাদের কাছে এটা সন্দেহ হয়। আমাদের কাছে সন্দেহ হওয়ার পরে আমরা যখন তদন্ত করতে যাই তখন ওর খোঁজ পাই। টেন্ডারবাজি থেকে শুরু করে বদলি, নিয়োগ এই ধরনের কাজগুলোই সে বেশি করত।'

    ভুক্তভোগীরা এখন একের পর এক অভিযোগ দিচ্ছেন গোয়েন্দা পুলিশের কাছে। তারা বলছেন, মোজাম্মেল এমনভাবে পরিচয় দিতেন যে এখনো বহু মানুষ জানে তিনি মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী।

    এক ভুক্তভোগী বলেন, 'আমি ঢাকা কলেজ থেকে পড়ালেখা শেষ করেছি। আমি হলে থাকতাম সেই সুবাদে হল থেকে মোজাম্মেলের সাথে আমার পরিচয়। পরিচয় হওয়ার পর আমি মোজাম্মেলকে বললাম আমার ভাতিজাকে একটা চাকরি দেয়া যাবে কিনা। এরপর আমি তাকে আমার ভাতিজার সিভি দিয়েছিলাম। এরপরে সে ভাতিজাকে চাকরি দেবে বলে টাকা নিয়ে প্রতারণা করে।'

    ওবায়দুল কাদেরের একান্ত সচিব জানিয়েছেন, মোজাম্মেল নামের কাউকে তারা চিনতেন না। মোজাম্মেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানান তিনি।

    ওবায়দুল কাদেরের একান্ত সহকারী আবুল তাহের মোহাম্মদ মহিদুল হক বলেন, 'আমরা মোজাম্মেল নামে কাউকে চিনি না। মন্ত্রী মহোদয় এ বিষয়টার দায়িত্ব পিএস'কে দিয়েছেন। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে।'

    পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় আর কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও আটক করা হবে।

    প্রকাশিত: শনিবার, ২৬ ডিসেমম্বর, ২০২০