• সর্বশেষ আপডেট

    বাগমারায় বন্যার পানি কমতে শুরু হলেও কমেনি জনদুর্ভোগ!


    ছবি দিগন্ত

    বাগমারা প্রতিনিধিঃরাজশাহীর বাগমারায় ধীরে ধীরে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। বন্যার পানি কমার কারনে বাগমারা উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নত হচ্ছে। ধীরে ধীরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও জনদুর্ভোগ কমেনি এলাকার সাধারন বানভাসী মানুষের।

    গত দুই সপ্তাহ ধরে টানা বর্ষনে বাগমারা উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়। বন্যায় ১৬ টি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসভার মধ্যে ১৩ টি ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামে বন্যার পানি ঢোকে পড়ে কাঁচা বাড়িঘর ভেঙ্গে পড়ে মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠে। বন্যা কবলিত ১৩টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্রে আশ্রয় নেয়।

    নওগাঁ আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধির কারনেই বাগমারায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়। বন্যায় ১৩টি ইউনিয়নের কয়েক হাজার হেক্টর জমির পাকা ধান পানির নীচে তলিয়ে যায়। শত শত বিঘা জমির পানবরজ, মরিজসহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেত বন্যার পানিতে ভেসে যায়। এছাড়াও শত শত পুকুর ও বিলের চাষকৃত রুই, কাতলা, মৃগেলসহ বিভিন্ন প্রজাতীর মাছ গুলো বন্যার পানিতে ভেসে যায়। দিশেহারা হয়ে পড়ে বাগমারার কৃষকেরা। কোটি কোটি টাকার ফসল বিনষ্ট হয় এবারের বন্যায়।

    আত্রাই নদীর বঁাঁধ ভেঙ্গে বাগমারায় ফকিরনী ও বারানই নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। ফকিরনী নদীর পানি প্রবাহের ধারন ক্ষমতা কম হওয়ায় উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নের খাল, বিল ভরে লোকালয়ে পানি ঢোকে পড়ে। লোকালয়ে পানি ঢোকে পড়ার কারনেই বাগমারার কৃষককুল ক্ষতির সম্মুখিন হয়। কোটি কোটি টাকার ফসল নষ্ট হওয়ায় কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়ে। উপজেলার সাথে ১৩টি ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। নাটোরের সিংড়াই বেড়িবাঁধ ভাঙ্গার কারনেই বাগমারায় বন্যা পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হতে শুরু করেছে। ডুবে যাওয়া রাস্তা গুলো থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। দুই এক দিনের মধ্যে যোগাযোগ বিছিন্ন ইউনিয়ন গুলো আবারো উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগের সুবিধা পাবে বলে মনে ককরা হচ্ছে।

    বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু হলেও জনগনের দুর্ভোগ এখনো কমেনি। বন্যাদুর্গত এলাকার জনসাধারন এখনো তাদের বসতবাড়িতে ফিরে যেতে পারেনি। কেউ কেউ বসতবাড়ি ফিরে গেলেও বসবাসের উপযোগী না হওয়ায় বাড়ির উঠানে পলিথিন টাঙ্গিয়ে বসবাস করার চেষ্টা করছে। বানভাসী মানুষের খাবার সংকটের সাথে সাথে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এ সব কারনেই বানভাসী মানুষের পেটের পিড়াসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছেন বলে এলাকার সচেতন মানুষ ধারনা করছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্যের পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বানভাসী মানুষের খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।

    বানভাসী মানুষদের মাঝে সরকারী ভাবে ত্রান বিতরনের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। বন্যা দুর্গত এলাকায় পুরাদমে ত্রান সামগ্রী বিতররন শুরু করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগন। ত্রান বিতরনের পাশাপাশি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘরের তালিকাও তৈরী করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

    এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহম্মেদ বলেন, বানভাসী মানুষদের মাঝে সরকারী ত্রান সামগ্রী বিতরনের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এছাড়াও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘরের তালিকা তৈরীর মাধ্যমে তাদেরকে পূর্ণবাসনের কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।


    প্রকাশিত:  বুধবার, ০৭ অক্টোবর, ২০২০