• সর্বশেষ আপডেট

    চিকিৎসা নিয়ে চসিক আইসোলেশন সেন্টারের হরিলুট।


    চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আইসোলেশন সেন্টারে করোনা উপসর্গ নিয়ে আসা একেকজন করোনারোগীর পেছনে ব্যয় দেখানো  হয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা করে। আর ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে তোলা চট্টগ্রাম  আইসোলেশন সেন্টারে একেকজন করোনারোগীর পেছনে খরচ পড়েছে মাত্র ৬ হাজার ১৭৮ টাকা।

    করোনা চিকিৎসার নামে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে (চসিক) এমন লুটপাটের ঘটনা বিগত বালিশ, পর্দা কান্ডকেও যেন  হার মানিয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে জানাজানি হলে বর্তমান  চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন  ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি টিম  গঠন করেছেন। 

    গত ২১ জুন চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ এক্সেস রোডের সিটি কনভেনশন হলে চট্টগ্রাম সিটি করর্পোরেশনের উদ্যোগে চালু করা হয় একটি আইসোলেশন সেন্টার। ২৫০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টারটির উদ্বোধন করেন সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। 

    চসিক আইসোলেশন সেন্টারে মোট ৫৫ দিনে ১২০ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন, আর ১২০ জন রোগীর  জন্য খরচ দেখানো হয়েছে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। তাতে দেখা যায়  মাথাপিছু জনপ্রতি রোগীর জন্য খরচ হয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা।

    তবে অন্যদিকে  হালিশহরে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠা চট্টগ্রাম  আইসোলেশন সেন্টার রোগীপ্রতি খরচ হয়েছে মাত্র ৬ হাজার ১৭৮ টাকা। প্রায় কাছাকাছি দুই আইসোলেশন সেন্টারে এমন তফাৎ? এ যেন চিকিৎসার নামে মহা হরিলুট!

    মানুষের  অনুদানে চলা এই প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা নিয়েছে ৭৬৫ জন রোগী। কদিন আগে আনুষ্ঠানিক ভাবে আয়- ব্যয় হিসাব দেই এই আইসোলেশন সেন্টার, সেখানে  সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৪৭ লাখ ২৬ হাজার ৫০০ টাকা।

    চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদের এক্সেস রোডে সিটি কর্পোরেশনের ওই আইসোলেশন সেন্টারের সমন্বয়কের দায়িত্বে ছিলেন যান্ত্রিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক। শুরুতেই দরপত্রবিহীন ২ কোটি টাকার বেশি খরচ দেখানো ছাড়াও হিসাবের গরমিলসহ নানা অভিযোগ উঠে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

    বিশিষ্ট জনেরা বলছেন দেশের এই ক্লান্তিকালীন সময়ে এ ধরনের  চুরি হরিলুট  মোটেই সঠিক নয়। এটা বহুল আলোচিত বালিশ, পর্দা কেলেংকারিকেও হার মানিয়েছে।

    তিন সদস্যের গঠিত কমিটি তাদের তদন্ত শুরু করেছে, ইতিমধ্যে আইসোলেশন সেন্টারের ব্যয়ে গরমিল শনাক্ত করেছে বলে জানা গেছে।

    এতে যান্ত্রিক শাখার ভারপ্রাপ্ত তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক, ডা. সুশান্ত বড়ুয়া, প্রকৌশলী সালমা, বিদ্যুৎ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ঝুলন কুমার, স্টোরের দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রকৌশলী ও নেজারত শাখার একজনসহ সবার কাছ লিখিত আকারে আইসোলেশন সেন্টারের কেনাকাটা ও খরচের তথ্য চাওয়া হয়েছে।

    চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদুল আলম সুজন বলেন, আমি দুর্নীতি মোটেও বরদাস্ত করবো না। আইসোলেশন সেন্টারের খরচ ও কেনাকাটার বিষয়টি আমলে নিয়ে  তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। সেখানে  কিভাবে ৩, ৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।  তদন্তের প্রমাণ পেলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। 


    প্রকাশিত:শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০