• সর্বশেষ আপডেট

    নওগাঁর রাণীনগরে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগঃ

    সাইদ চৌধূরী, রানীনগর-নওগাঁঃ- নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ৫নং বড়গাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি যে কোন ধরনের বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিন্তু সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্তা ব্যক্তিদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন লাভ না হওয়ায় চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে ওই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের মাঝে।

    ওই ইউনিয়নের সকল কাজে চেয়ারম্যানের একক স্বেচ্ছাচারিতায় ভেঙে পড়েছে পরিষদের স্বাভাবিক কাজ। এছাড়াও নানা ধরনের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে চেয়ারম্যান ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের অনিয়মের কারণে সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। সম্প্রতি পরিষদের সদস্য ইব্রাহিম আলী (নূর) জেলা প্রশাসক, নির্বাহী কর্মকর্তাসহ কয়েকটি দপ্তরে পরিষদে আসা সরকারি ধরনের নানা বরাদ্দে চেয়ারম্যানের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন। কিন্তু আজও চেয়ারম্যান কতিপয় সদস্যদের নিয়ে তার অবৈধ কর্মকাণ্ড বহাল তবিয়তে চালিয়ে আসছেন।
    অভিযোগকারী ইউনিয়নের সদস্য ইব্রাহিম আলী (নূর) বলেন, শফিউল আলম শফু চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে এলজিএসপি-৩ (ভর্তুকী), দু:স্থ ভাতা, সরকারি যে কোন ধরনের বরাদ্দে চরম অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছেন। টাকা ছাড়া চেয়ারম্যান কিছুই বোঝেন না। কোন কাজ আসলে যে সদস্য তার চাহিদা মাফিক টাকা দিতে পারেন তাকে কাজ দেন, আর যে দিতে পারেন না তার কাজ অন্যজনকে দেন। এতে করে আমি প্রতিনিয়তই আমার এলাকার মানুষদের গালমন্দ খেয়ে আসছি।

    আমি চেয়ারম্যানের বিভিন্ন অবৈধ কর্মকান্ডে বাধা দেওয়া ও প্রতিবাদ করায়, তার চাহিদা মাফিক ঘুষ না দেওয়ায় গত বছরের জানুয়ারি মাস থেকে পরিষদে আসা কোন বরাদ্দের কাজই আমাকে দেন না। এমন কি ভর্তুকি কার্ড, দু:স্থ ভাতার কার্ড, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধি ভাতা, বিধবা ভাতার কার্ড টাকা ছাড়া করে দেন না। এছাড়াও টিআর, কাবিখা এবং এলজিএসপির কাজ না করেই তিনি শতকরা ৩৪ ভাগ অর্থ আত্মসাত করে আসছেন। তার কর্মকান্ডে বাধা দেওয়া ও প্রতিবাদ করার কারণে চেয়ারম্যান পরিষদের সদস্যদের নিয়ে নিয়মিত মাসিক মিটিংও করেন না।

    এছাড়াও প্রতিবাদ করতে গেলেই তিনি আমাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়-ভীতি ও হুমকি-ধামকি প্রদান করতেন। শুধুমাত্র তার পছন্দ মাফিক কতিপয় সদস্যদের নিয়ে পেশিশক্তির মাধ্যমে তিনি নিজের ইচ্ছেমতো পরিষদ চালিয়ে আসছেন। পরিষদের হিসাব-নিকাশ নিয়মিত হয় না এবং আমাকে নিয়মিত ভাতা দেওয়া হয় না। পরিষদের কোন সনদপত্র নিতে এলে দ্বিগুন টাকা আদায় করা হয়।

    চেয়ারম্যানের এমন অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে কেউ সহজে পরিষদের কোন সেবা নিতে আসেন না। একজন সদস্য হিসেবে এলাকার উন্নয়নে সরকারি বরাদ্দ এলেও আমাকে তার বিন্দুমাত্র দেওয়া হচ্ছে না। যার কারণে আমার উন্নয়ন বঞ্চিত ও অবহেলিত এলাকা নানা ধরনের উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। চেয়ারম্যানের এই সব অনিয়ন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করে পরিষদের একটি সুন্দর পরিবেশ ও সদস্যদের নায্য অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আমি সরকারের উর্দ্ধতন কর্তা ব্যক্তিদের সুদৃষ্টি কামনা করছি। তা না হলে এই ইউনিয়নের লাখ লাখ মানুষ তাদের নায্য অধিকার ও উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েই আসবেন।

    চেয়ারম্যান শফিউল আলম বলেন, নূর মেম্বার নিজেই একজন দুর্নীতিগ্রস্ত মেম্বার। বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে তাকে সাময়িকভাবে সাসপেন্ড করে রাখা হয়েছে। তার বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বাধা দেওয়ায় তিনি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। তিনি তো পরিষদেও ঠিকমতো আসেন না। আমি সাধ্যমতো পরিষদকে সঠিকভাবে পরিচালনা করার চেষ্টা করে আসছি।

    উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, এই বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

    প্রকাশিত: শনিবার ৮, অগাস্ট ২০২০