• সর্বশেষ আপডেট

    গাজীপুরের শ্রীপুরে নিয়ম নীতিহীন ভাবে চলছে ফার্মেসি ব্যবসা! প্রশাসনের নজরদারি প্রয়োজন।

    মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, গাজীপুরঃ- গাজীপুরের শ্রীপুরে অলিতে গলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে সহস্রাধিক ওষুধের দোকান। ওষুধ প্রশাসনের নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে শুধু ট্রেড লাইসেন্স নিয়েই ফার্মেসি ব্যবসা শুরু! এসব ফার্মেসি চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই হায়ার অ্যান্টিবায়োটিক, নিষিদ্ধ, ভারতীয়, নকল, মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিম্নমানের নানা প্রকার ওষুধ বিক্রি করছে অবাধে। ফলে রোগ নিরাময়ের পরিবর্তে সঠিক ওষুধের অভাবে আরও জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন রোগী। এতে আর্থিক, শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন অনেক রোগী ও তাদের পরিবার-পরিজন। ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ বিক্রির ক্ষেত্রে ভালমানের ওষুধের চেয়ে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বেশী কমিশন দেয়া হয়।

    অথচ ড্রাগ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ, ১৯৮২-এর ৪ নম্বরের ১৩ নম্বর ধারার ‘ফার্মাসিস্টদের নিয়োগ’ শিরোনামের ২ নম্বর ধারায় উল্লেখ আছে ‘কোনো খুচরা বিক্রেতা বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলের কোনো রেজিস্ট্রারের রেজিস্ট্রিভুক্ত ফার্মাসিস্টদের তত্ত্বাবধান ব্যতিরেকে কোনো ড্রাগ বিক্রি করতে পারবে না।ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের বিধি অনুযায়ী, প্রতিটি ফার্মেসিতে একজন করে ফার্মাসিস্ট থাকা বাধ্যতামূলক। অথচ শ্রীপুরে ফার্মাসিস্টের তুলনায় ফার্মেসির সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি। ওষুধ সংরক্ষণের জন্য ন্যূনতম যে নিয়মনীতি রয়েছে সেগুলোর কিছুই মানা হয় না।

    ওষুধ প্রশাসনকে বৃদ্ধা আঙ্গুল প্রদর্শন করে শ্রীপুর উপজেলার প্রায় ওষুধের দোকানগুলোতে অবাদে বিক্রি হচ্ছে এসব নিষিদ্ধ ওষুধ।অধিকাংশ ফার্মেসি, ড্রাগ লাইসেন্সের শর্ত না মেনে অদক্ষ লোক দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছে। মাধ্যমিকের গণ্ডি পার হননি এমন অনেকেই ফার্মেসিতে চাকরি করছেন। অনেকে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রও পড়তে পারেন না। ওষুধের নামের আধ্যাক্ষর দেখে অনুমান করেও ওষুধ বিক্রি করার অভিযোগ আছে।

    অভিযোগ রয়েছে অনভিজ্ঞ এসব দোকানীরা ওষুধ কোম্পানির উপঢৌকনের লোভে অপ্রয়োজনেও যেনতেন ভাবে বিক্রি করে সকল প্রকার ওষুধ ।এবং ফার্মেসিগুলো কোনো দিক চিন্তা না করেই ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ব্যতিত সিপ্রোফ্লোক্সাসিলিন, এজিথ্রোমাইসনসহ অনেক হাই অ্যান্টিবায়োটিক, ঘুমের বড়ি, ব্যাথা নাশক ও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট অবলীলায় বিক্রি করছে। এ ছাড়াও প্রকাশ্যে মজুদ রেখে বিক্রি করা হচ্ছে আমদানী নিষিদ্ধ ওষুধ।

    কয়েকজন সচেতন ক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, এখন ফার্মেসিতে আর বিশেষজ্ঞদের দরকার হয় না। ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভরা বলে দেন কোন ওষুধ কখন এবং কি কাজে লাগে- সেই মোতাবেক ওষুধ বিক্রি হয়। এছাড়া অনেক ওষুধের দোকানে নিম্নমানের ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভরা ওষুধ বিক্রি করে দেয়। এমনকি তারা অসচেতন রোগীর ডাক্তারের ভুমিকায়ও অবতীর্ণ হন।

    আরো জানা যায় একটি বিশেষ কার্ডকে (সাংবাদিক) পদর্শন করে অবৈধ ব্যবসার ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে উল্টো প্রশাসনকে বিতর্কিত তারার অপচেস্টা করে অনেকে। এবং ভ্রাম্যমান আদালত বা প্রশাসনিক অভিযানের আগেই এসব অবৈধ দোকানপাট বন্ধ করে রাখা হয়। তাই সচেতন মহলের দাবি আগে থেকে গোপনে তথ্য সংগ্রহ করে অভিযান পরিচালনা করার।

    প্রকাশিত: বুধবার, ১৫ জুলাই, ২০২০