• সর্বশেষ আপডেট

    বন্যায় বাগমারায় পানচাষিদের ব্যাপক ক্ষতি

    মুকুল হোসেন, বাগমারা: নোভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) পাশাপাশি, রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার প্রায় সকল ইউনিয়নে ছড়িয়ে পড়েছে বন্যার পানি। বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে বিভিন্ন এলাকা।বন্যার পানি বর্তমানে উপজেলার নদ-নদীতে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে গেছে বিভিন্ন গ্রাম।এতে করে হাজারো মানুষ হয়ে পড়েছে পানিবন্দি।রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় বন্যায় পান চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।পান চাষীদের কয়েক শ পান বরজ পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে কোটি কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।

    একমাত্র উপার্জনের জায়গা বন্যায় তলিয়ে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অনেক কৃষক।

    উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভা এলাকায় ১৫৫০ হেক্টর জমিতে পানের চাষাবাদ করা হয়।অনেক ইউনিয়নে কৃষকদের উপার্জনের একমাত্র পথ হলো পান বরজ।এক সপ্তাহের ব্যবধানে উপজেলায় বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রায় চারশ পান বরজে পানি ঢুকে পড়ে।দ্বীপপুর ইউনিয়নের লাউবাড়িয়া গ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে আশে-পাশের ছয়টি গ্রামে পানি ঢুকে বাড়িঘর, ফসলাদি ও পান বরজের ক্ষতি হয়।
    এরপর টানাবর্ষনে বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে থাকে।

    লাউবাড়িয়া গ্রামের পানচাষী সিদ্দিকুর রহমান জানান, তার পানবরজ বাধ ভাঙ্গার কিছুক্ষনের মধ্যেই তলিয়ে যায়। এতে তিনি প্রায় পাঁচ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন।
    পান বরজের সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয় গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের উদপাড়া, বাজে গোয়ালকান্দি ও সেনোপাড়া গ্রামে।

    সেনোপাড়া গ্রামের কৃষক আসাদুল ইসলাম জানান, তার তিনটি পান বরজের দুইটাই তলিয়ে গেছে।একই গ্রামের আয়াত শাহ, আবুল আজাদ, রমজান শাহ, ফেরদৌস, আরিফ, আজাদুল, সান্টু, রেজাউল, আয়ের উদ্দিন, মোজাহার আলীসহ প্রায় শতাধিক কৃষকের প্রায় তিনশ পান বরজ তলিয়ে গেছে।

    ক্ষতিগ্রস্থরা জানান, পান বরজ তলিয়ে যাওয়ায় পানিতে নেমেই অধিক পরিশ্রমে পান সংগ্রহ করে বাধ্য হয়েই বাজারজাত করতে হচ্ছে।

    অনেকেই আত্বীয়-স্বজন এনে পান সংগ্রহের কাজে লাগিয়েছেন। পানিতে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে পান।
    পান চাষী নান্টু বলেন, যে পরিমাণ শ্রমিকের টাকা দিয়ে পান বরজ থেকে পান সংগ্রহ করে বাজারে নিয়ে যাচ্ছি বিক্রির পর লাভের দেখা মিলছেনা।

    শরিফুল ইসলাম জানান, গত তিন দিন ধরে আট দশটি শ্যালো মেশিন দিয়ে দিনরাত পানি সেচ করেও আমরা ব্যর্থ। যেটুকু সেচে কমে যায় বৃষ্টির পানিতে আবার ডুবে যায় পান বরজ এলাকা।
    এদিক থেকেও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে বলে জানান তিনি।
    অনেক কৃষক জমি বর্গা নিয়ে পান বরজ স্থাপন করে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সংসার পরিজন নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়েছেন বলে জানিয়েছেন।

    যোগাযোগ করা হলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুর রহমান জানান, চলমান বন্যার কারনে উপজেলার ২০ হেক্টর জমির পান বরজ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।পান চাষীরা আর্থিক ভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলেও জানান তিনি।

    প্রকাশিত: বুধবার ২২ জুলাই, ২০২০