• সর্বশেষ আপডেট

    বাগমারায় চাপ প্রয়োগ করে কিস্তি আদায়ের অভিযোগ এনজিওদের বিরুদ্ধে

    Realize installments applying pressure

    মুকুল হোসেন, বাগমারা-রাজশাহীঃ- রাজশাহীর বাগমারায় বিভিন্ন এনজিওদের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের কাছ থেকে চাপ প্রয়োগ করে কিস্তি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

    করোনার প্রাদুর্ভাবে চলমান সংকটে কর্মহীন হয়ে পড়া সাধারন গ্রাহকদের সংসার পরিজন নিয়ে জীবন যাপনে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে গ্রাহকদের পক্ষে ঋনের কিস্তি প্রদান কষ্ট সাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরই মাঝে ফেসবুক পেইজে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক ঘোষনা দেন জুন মাস পর্যন্ত এনজিওগুলো যেন জুন মাস পর্যন্ত সকল প্রকার কিস্তি আদায় থেকে বিরত থাকেন।  চাপ প্রয়োগ করে কিস্তি আদায় না করার জন্য আহ্বান জানান রাজশাহীর জেলা প্রশাসক হামিদুল হক।

    এছাড়াও বাগমারায় উপজেলা প্রশাসন নামের ফেসবুক আইডি থেকেও জেলা প্রশাসকের বরাত দিয়ে জানানো হয়, এনজিও থেকে গৃহীত ক্ষুদ্র ঋনের কিস্তি পরিশোধে কোনও ঋণ গ্রহিতাকে ৩০জুন/২০ পর্যন্ত কিস্তি পরিশোধে বাধ্য করা যাবে না। এমন ঘোষনার পর কর্মহীন হয়ে পড়া গ্রাহকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে।

    কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন নির্দেশনা থাকলেও তা মানছে না এনজিওগুলো। গ্রাহকরা অভিযোগ করেন এনজিও কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিস্তির জন্য চাপ প্রয়োগ করছেন।

    উপজেলার হামিরকুৎসা ইউনিয়নের মাঝগ্রামের হান্নান রশিদ জানান, তিনি শাপলা গ্রাম উন্নয়ন সংস্থার ক্ষুদ্র ঋন কর্মসূচীর আওতায় ভবানীগঞ্জ শাখা হতে লোন গ্রহন করেন। করোনা সংকটে সংসার চালাতে তিনি হিমশিম খাচ্ছেন। হঠাত করেই সংস্থার লোকজন তার বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নেয়। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত সংস্থার লোকজন তার বাড়িতে অবস্থান করেন। এসময় তিনি কিস্তি দিতে না পেরে বাড়ি থেকে সরে যান।

    একই গ্রামের টিপু, আব্দুল জলিল, মদন সরদার, সাইদুর রহমান, আব্দুস সামাদ, রুবেল, নজের আলী, ফজলু, আমিনুল হকসহ অনেক গ্রাহক জানান, ওই এলাকায় শুধু শাপলা নয় শতফুল বাংলাদেশ, ঠ্যাঙ্গামারাসহ বিভিন্ন এনজিও গ্রাহকদের কাছ থেকে কিস্তি পরিশোধে চাপ প্রয়োগ করছে।



    উপজেলার তালঘরিয়া গ্রামের বাবলুর রহমান জানান, ওয়েভ ফাউন্ডেশন বীরকুৎসা শাখা ও গাঙচিল তাহেরপুর শাখা হতে কিস্তি আদায়ে চাপ প্রয়োগ করছে।

    একই গ্রামের আমিনুল হক জানান, তিনি ব্র্যাক নখোপাড়া শাখা হতে চার লাখ টাকা লোন করেন। কিস্তি ঠিকমতই পরিশোধ করতেন, কিন্ত করোনার কারনে কিস্তি দেয়া স্থগিত ছিল। হঠাতই তারা চাপ প্রয়োগ করে কিস্তি আদায় করে নিয়েছে। এছাড়াও ব্র্যাক, আশা ও গ্রামীণ ব্যাংক আলোকনগর শাখা হতেও চাপ প্রয়োগ করে কিস্তি আদায় করা হচ্ছে।

    তালঘরিয়া গ্রামের নুর মোহাম্মাদের স্ত্রী আসমা পারভীন জানান, প্রতি সোমবার করে আলেয়ার বাড়ির কেন্দ্র হতে গ্রামীন ব্যাংকের কর্মী এসে চাপ প্রয়োগ করে কিস্তি আদায় করছে।

    এছাড়াও নওগাঁ মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ নামের এনজিও (সাবাইহাট অফিস) গ্রাহকদের কিস্তি আদায়ে চাপ প্রয়োগ করছেন বলে ভুক্তভোগী ভবানীগঞ্জের মুরগী ব্যবসায়ী বাবলুর রশিদ অভিযোগ করেন।

    শিকদারী বাজারের ফল ব্যবসায়ী খাইরুল ইসলাম বলেন, এনজিও গুলো ভয়ভীতি দেখিয়ে চাপ প্রয়োগ করে কিস্তি আদায় করছে।

    এ বিষয়ে শাপলা গ্রাম উন্নয়ন সংস্থার ভবানীগঞ্জ শাখা ব্যবস্থাপক সেলিম রেজার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কিস্তি আদায়ে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই।

    এ ব্যাপারে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফ আহম্মেদ জানান, কোন এনজিও গ্রাহকদের কিস্তি পরিশোধে বাধ্য করতে পারবে না। স্বেচ্ছায় কেউ চাইলে পরিশোধ করতে পারবে। যদি কোন এনজিও কিস্তি পরিশোধের জন্য গ্রাহকদের চাপ প্রয়োগ করে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও তিনি জানান।


    প্রকাশিত: রবিবার, ২১ জুন, ২০২০