করোনার দুটি ভ্যাকসিন পরীক্ষার অনুমোদন দিল চীন
“করোনাভাইরাস” নামটির উৎপত্তি ল্যাটিন শব্দ করোনা থেকে যার অর্থ “মুকুট” বা “হার”।
মহামারি করোনাভাইরাসের একটি কার্যকর প্রতিষেধক হাতে পেতে দুটি ভ্যাকসিনের ‘মানব পরীক্ষার’ অনুমোদন দিয়েছে চীন। এই দুটি ভ্যাকসিন তৈরি করেছে বেইজিংভিত্তিক কোম্পানি সিনোভাক বায়োটেক এবং উহান ইনস্টিউট অব বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টস।
চীনের সরকারি বার্তা সংস্থা শিনহুয়ার মঙ্গলবারের প্রতিবেদনে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠান দুটি চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত চায়না ন্যাশনাল ফার্মাসিটিউক্যালস গ্রুপের অঙ্গসংস্থা। চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশনও এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
হংকং থেকে প্রকাশিত আল জাজিরার সারাহ ক্লার্ক জানিয়েছেন, চীন জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনও নিশ্চিত করেছে মানব পরীক্ষার অনুমোদন।
এর আগে গত মার্চে চীন সরকার আরও একটি করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন দেয় চীন; এখন দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে। ওই ভ্যাকসিন তৈরির কাজটি করছে চীনের দেশটির সামরিক বাহিনীর প্রতিষ্ঠান অ্যাকাডেমি অব মিলিটারি মেডিকেল সায়েন্স।
গত ১৬ মার্চ এমআরএনএ–১২৭৩ নামে যুক্তরাষ্ট্রের বায়োটেকনোলজি কোম্পানি মর্ডানার আনুকূল্যে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো করোনার ভ্যাকসিনের মানব পরীক্ষার ঘোষণা দেওয়ার পর চীনও তাদের ভ্যাকসিনের মানব পরীক্ষার কথা জানায়।
মহামারি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এখনো কোনো ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি। তবে বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা প্রাণঘাতী এই ভ্যাকসিন তৈরির জন্য দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থার দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, গোটা বিশ্বে অর্ধশতাধিক ভ্যাকসিন পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে।Good news! China approved clinical trials for two types of inactivated #vaccines for #COVID_19 on Tuesday. pic.twitter.com/4nx41wiN20— China Daily (@ChinaDaily) April 14, 2020
সাধারণত একটি ভ্যাকসিন শুরুতে পরীক্ষাগারে তৈরির পর সেখানেই প্রাথমিক পরীক্ষাটি করা হয়। পরে তা প্রাণীর দেহে প্রয়োগ করা হয়। সেখানে কার্যকর ও নিরাপদ প্রমাণিত হলে তা ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পর্যায়ে প্রবেশ করে, যেখানে এটি মানুষের ওপর প্রয়োগ করা হয়।
ক্লার্ক বলেন, "আমরা এখন নিশ্চিত করতে পারি যে তিনটি বিশেষ ভ্যাকসিন চীনে পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন বলেছে যে তারা বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিনগুলির ব্যাপক উত্পাদন করার আগে তাদের বেশ কয়েকটি শর্ত পরিষ্কার করতে হবে।"
সাহসী সিদ্ধান্ত
বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির জন্য সময়ের সাথে লড়াই করছেন, যা বিশ্বব্যাপী ১১৯,০০০ এরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং ১.৯ মিলিয়নেরও বেশি সংক্রমণ করেছে।
ক্লার্ক জানিয়েছে, চীনে প্রথম অনুমোদিত ভ্যাকসিনটি তার দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষার কাজ শুরু করেছে।
নিকোলস আল জাজিরাকে বলেছেন, "সাধারণত ভ্যাকসিন দিয়ে আপনি ছোট প্রাণী দিয়ে শুরু করেন এবং তারপর প্রাইমেট এবং পরে মানুষের কাছে যান" "মনে হচ্ছে এটির সাথে তারা সরাসরি মানুষের কাছে চলে গেছে, এটি একটি অত্যন্ত সাহসী সিদ্ধান্ত।
নূরসাফা সুমন
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২০