• সর্বশেষ আপডেট

    চান্দিনায় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি ক্রেতারা


    কুমিল্লার চান্দিনায় করোনা ভাইরাসের অযুহাতে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে সাধারণ ক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা ইচ্ছে মতো উচ্চ মূল্যে বিক্রি করছে চাল, ডাল, আটা, ময়দা, ভোজ্য তেল, মরিচ গুড়া, আদা, পেয়াজ, রসূন, এলাচসহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্য।

    প্রশাসনের বাজার মনিটরিংয়ের সরকারি নির্দেশনা থাকলেও নিয়মিত বাজার মনিটরিং না করার কারণে বাজারে ওই নিয়ন্ত্রণহীন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতা ও ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ। বেশিরভাগ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানেই নিত্যপণ্যের মূল্য তালিকা নেই। আবার থাকলেও সেই তালিকা অনুযায়ী বিক্রি করা হচ্ছে না।

    এদিকে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কোন যুক্তিযুক্ত কারণ না থাকায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ক্রেতারা। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের অসদুপায়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস।

    বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) সরেজমিনে চান্দিনা উপজেলা সদরের চান্দিনা বাজার ঘুরে সুবর্ণ চন্দ্র রায়ের মালিকানাধীন মেসার্স রায় ব্রাদার্স, তপন চন্দ্র সাহা ষ্টোর, পরিমল চন্দ্র রায় ষ্টোর, নির্মল সাহা, সন্তোষ কুমার সাহা ষ্টোর, হানিফ ব্রাদার্স এ কথা বলে জানা যায়, প্রায় সব ধরনের নিত্য পণ্যেরই দাম বেড়েছে।

    ৪-৫ দিনের ব্যবধানে পায়জাম চাল ৫০ কেজির বস্তা প্রতি ৩শত টাকা বেড়ে ১৯০০-২০৫০টাকা, মিনিকেট চাল ২শত ৫০ টাকা বেড়ে ২৬০০ টাকা, মিনিকেট (২৮) চাল ৩শত টাকা বেড়ে ২০৫০টাকা, বাসমতি চাল ৩শত ৫০ টাকা বেড়ে ৩২৫০টাকা, মোটা চাল ৩শত টাকা বেড়ে ১৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।



    পেয়াজের দাম এক রাতের ব্যবধানে ২০-২৫টাকা বেড়েছে। বুধবার পেয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৫ টাকা কেজি। বৃহস্পতিবার সেই পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০টাকা। ৯০ টাকার রসুন হচ্ছে ১১০-১৫০টাকা কেজি। শুকনা মরিচ দাম বেড়ে ২৭০টাকা, হলুদ ১৬০টাকা।

    মশুর ডাল (মোটা) প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০টাকা, মশুর ডাল (চিকন) ১১০-১২৫টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

    খুচরা ব্যবসায়ীরা সয়াবিন তেল কেজি প্রতি ১০-২০ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছে। প্রতিকেজি এলাচ ৫শত টাকা বাড়িয়ে ২হাজার ৯শত টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। মরিচ গুড়া ৪০টাকা বেড়ে ২৬০টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় বেশিরভাগ পণ্যই অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে।

    মো. জসিম উদ্দিন, মো. জাকির হোসেন, মো. আবু তাহের সহ বেশ কয়েকজন ক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, ‘হঠাৎ করেই চান্দিনার ব্যবসায়ীরা চাল, ডাল, তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে।’ গত সপ্তাহের চেয়ে চলতি সপ্তাহে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম অনেক বেশি।

    এব্যাপারে চান্দিনা বাজার চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও পৌরসভার কাউন্সিলর মো. দুলাল মিয়া জানান, ‘দিনাজপুর, বগুরা, নওগা থেকে আমরা চাল ক্রয় করি। ওইখানেই মিল মালিকরা ৫০ কেজির বস্তাপ্রতি ২-৩শত টাকা করে দাম বাড়িয়েছে। আমরা বর্ধিত মূল্যে ক্রয় করছি। সেই অনুযায়ী বিক্রি করছি।’

    চান্দিনা বাজার মুদি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. বাহারুল ইসলাম বাহার এর নিকট মূল্য বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন- ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আজ রাতেই মুদি ব্যবসায়ী সমিতির জরুরী মিটিং আহ্বান করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

    চান্দিনা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. এরশাদ আলী ভূইয়া বলেন- ‘মূল্য বৃদ্ধির খবর পেয়ে আমি বাজারে খোজ নিয়েছি। প্রায় সব জিনিসের দামই বেশি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাজার মনিটরিং না করার কারণেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।’

    এব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নেহাশীষ দাস বলেন- ‘আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। কোন যৌক্তিক কারণ ছাড়া অতিরিক্ত মূল্য নিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

    কুমিল্লা উঃ জেলা প্রতিনিধিঃরাজীব ইমাম

    প্রকাশিত:শুক্রবার, ২০ মার্চ, ২০২০