• সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ

    "এস আলম গ্রুপ" সেবা ও মানবিকতায় উজ্জ্বল

                                                    "এস আলম গ্রুপ" সেবা ও মানবিকতা  উজ্জ্বল
       ***জহুরুল ইসলাম***
    জীবন ধারণকে স্বস্তির মধ্যে রাখার সক্ষমতাকে দক্ষ ও কল্যাণমূলক ব্যবস্থার মাপকাটি হিসেবে বিবেচনা করাহয়। তাই কল্যাণমূলক ব্যবস্থার মূল দায়িত্ব হলো জনমুখী কর্মকান্ড সম্প্রসারণ যেমন- মানুষ যে যার সাধ ওসাধ্যের মধ্যে খেয়ে পরে বাঁচতে পারবে, ছেলে মেয়েরা পড়াশোনার সুযোগ পাবে, কর্মসংস্থান হবে,চিকিৎসা ও মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ রকম স্বস্তিদায়ক একটি ব্যবস্থা এখনও দেশে গড়ে ওঠেনি যদিও উন্নয়নের সূচক হিসেবে প্রচারিত দৃশ্যমান অবকাঠামো ক্রমেইবাড়ছে। 

    বলা হয় এ ন্যূনতম চাহিদা পূরণ আমাদের মতো দেশে খুব সহজ হয় না এবং সরকারের একার পক্ষে
    সম্ভবও নয়। তাই জনকল্যাণ ও সেবাধর্মী কর্মকান্ডে সক্ষম ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। অর্থাৎ এর মূল কথা হলো সেবা ও কল্যাণে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি কর্মকান্ড সম্প্রসারণ।

    এ দিকটার গুরুত্ব বিবেচনায় সামাজিক দায়িত্বশীলতা থেকে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, শিল্প
    প্রতিষ্ঠান/গ্রুপ- কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশসহ নানা খাতে কাজ করছে এবং উল্লেখযোগ্য
    অবদান রাখছে। এরকম বড় কয়েকটি শিল্প গ্রুপের মধ্যে এস আলম গ্রুপ অন্যতম। 

    চট্টগ্রাম ভিত্তিক শীর্ষস্থানীয় এ শিল্প গ্রুপের ‘চট্টগ্রামের প্রতি বিশেষ টান’ থাকা দুটি বিষয়ের উপর আলোকপাত করা যায়। কর্মসংস্থান ও স্বাস্থ্য এ দুটি খাতে এ শিল্প গ্রæপের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

    প্রথমেই কর্মসংস্থান প্রসঙ্গঃ দেখা যাক কর্মসংস্থান ও স্বাস্থ্যখাতে উল্লেখিত শিল্প গ্রুপের কর্মকান্ড কি।

    প্রয়োগিক কাজের সাথে শিক্ষার মিল কম আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায়। তাই শিক্ষিত, বেকার জনগোষ্ঠীর
    আকার অনেক বড়। পড়ালেখা শেষ করে বয়সের নির্দিষ্ট গন্ডি প্রায় পার হতে যাওয়া তরুণরা থাকে গভীরচিন্তামগ্ন। 

    এস আলম গ্রুপ এরকম প্রায় অর্ধ লক্ষ শিক্ষিত বেকারকে দেখিয়েছে বেঁচে থাকার স্বপ্ন-
    কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে তাদের বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চলের
    ছেলেমেয়েদের চাকুরীর সুযোগ দেয়ার কল্যাণধর্মীয় ও মানবিক পদক্ষেপটি ব্যাপকভাবে প্রশংসিত। এ
    গ্রæপে ৭টি ব্যাংকসহ ৩০টিরও বেশি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সহজে চাকুরী পাওয়া এবং সুস্থ
    কর্মপরিবেশে কাজ করা সত্যিই দূর্লভ একটি ব্যাপার আমাদের মতো দেশে।

    প্রসঙ্গক্রমে এখানে একটি অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরতে চাই। পরিচিত এক ভদ্রলোক শুনেছেন সাইফুল আলম মাসুদ সাহেবের সাথে কোন রকমে দেখা করা গেলে তাতে ছেলের একটা চাকরী হবে। বহু কষ্টে একদিন তিনি মাসুদ সাহেবের সাথে দেখা করতে পারলেন। সিএসইতে পড়ালেখা শেষ করা সন্তানকে কোথাও একটা ব্যবস্থা করে দেয়ার সবিনয় অনুরোধ জানালেন। বললেন অনেক মানুষকে চাকরি দিয়েছেন, আমার ছেলেটাকেও আপনার প্রতিষ্ঠানের কোথাও কাজ করার একটু সুযোগ করে দেন। এর পর যা ঘটল তাঁর ভাষায় স্বপ্নের মতো। দুপুরে সাক্ষাৎ, বিকেলে ফোন করে নিয়োগপত্র এক ব্যাংকে। তাঁর ভাষায় এ অনুভ‚তি হৃদয় শীতল করা, বর্ণনাতীত।
     

     আমার ছেলে এখন একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা, মন থেকে দোয়া করি মাসুদ সাহেবের জন্য। এভাবেই চাকুরী পেয়েছেন হাজার হাজার বেকার তরুন। চাকুরীকে সহজলভ্য করা এবং সুস্থ একটি কর্ম পরিবেশ থাকা অনেক বড় একটি ব্যাপার। এ অবদানকে কোন ‘হৈ-চৈ’ এ ঢেকে দেয়ার
    প্রবণতা কাম্য নয়। মনে রাখা দরকার যে সময়টাতে, যে ইস্যুতে হৈ চৈ সে সময়টা কেমন।
    এবার আসা যাক স্বাস্থ্যখাত প্রসঙ্গেঃ শুধু ব্যবসা নয়, জনকল্যাণমূলক কর্মকান্ডে সহযোগি হিসেবে
    অবদান রাখা কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচির অংশ। এ দায়বদ্ধতার আওতায় এস. আলম গ্রুপ   অযাত্রার শুরু থেকে সিএসআর কার্যক্রমকে গুরুত্ব দিচ্ছে। সে প্রচেষ্টারই অংশ হিসেবে দেশের স্বাস্থ্যখাতে কোম্পানিটি উল্লেখযোগ্য ভ‚মিকা পালন করছে; যা কোভিড-১৯ মহামারিকালে আরো জোরদার করা হয়।

    প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করে এ শিল্প
    গ্রুপ।

    এ সময় সরকারি-বেসরকরি হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজন ছিল আইসিইউ ভেন্টিলেটরসহ অত্যাধুনিক
    মেডিকেল সরঞ্জাম। এ ক্ষেত্রে এগিয়ে এসেছে এস. আলম গ্রুপের। কোম্পানিটি দেশের মোট ৬টি
    হাসপাতালে মুমূর্ষদের জীবন বাঁচাতে ১৬টি ভেন্টিলেটরযুক্ত আইসিইউ এর ব্যবস্থা করে। এছাড়া
    প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে দেওয়া হয় ৮টি হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানোলা (অক্সিজেন) ও পর্যাপ্ত সুরক্ষা
    সামগ্রী। এছাড়া, বগুড়া ও সিলেটেও উচ্চ মাত্রার অক্সিজেন সরবরাহ যন্ত্র হাইফ্লো ন্যাসাল ক্যানোলা ও
    আনুষঙ্গিক সরঞ্জামসহ অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রদান করে এস. আলম গ্রুপ। 

    শুধু রোগী নয়, চিকিৎসকদের সুরক্ষাতেও বিচক্ষণ ভ‚মিকা রেখেছে কোম্পানিটি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে এই শিল্প গ্রুপটি দিয়েছে ৫০০টি পিপিই, চিকিৎসকদের ডিউটি রুমে দুইটি এসি, আরো স্থাপন করা হয়েছে ২টি নমুনা কালেকশন বুথ। পাশাপাশি চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের কোরেন্টিনে থাকা চিকিৎসকদের আপ্যায়ন বাবদ নগদ সহায়তা, ১টি এসি, ২টি নমুনা কালেকশন বুথ ও চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সর্বমোট ৯৮ হাজারেরও বেশি পিপিই সরবরাহ করা হয় এ গ্রুপের পক্ষ থেকে।

    দেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন ও সাধারণ মানুষের জন্য সহজলভ্য স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে চট্টগ্রামে
    কোম্পানিটির তত্বাবধানে একটি হাসপাতাল নির্মিত হচ্ছে, যেটির নির্মাণকাজ প্রায় শেষের
    দিকে। হাসপাতালটির প্রধান উদ্দেশ্য হবে সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়া
    এবং চিকিৎসা সেবাকে আরো সহজলভ্য করে সবার দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া। এছাড়াও সারাদেশে
    আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অধীনে থাকা হাসপাতাল পরিচালনার ক্ষেত্রে এস. আলম গ্রুপ ম্যানেজমেন্ট এর
    সুদূরপ্রসারী অভিজ্ঞতা রয়েছে।

    এস. আলম গ্রুপ পূর্বেও শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দুর্যোগ মোকাবিল, পরিবেশ সংরক্ষণ ও মানবাধিকার রক্ষায়
    ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ইতিবাচক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এবং বর্তমানেও তাদের এ কার্যক্রম
    অব্যাহত রয়েছে। জাতীয় দূর্যোগের সময় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে নিয়মিতভাবে
    সহযোগিতা ও অনুদান দিয়ে আসছে এস. আলম গ্রুপ। সম্প্রতি চট্টগ্রামে ১৫ হাজার পরিবারের জন্য
    জরুরি ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেয়ার মাধ্যমে তারা বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং দেশের
    বিভিন্ন দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে সর্বাগ্রে অবস্থান নেয়ার মাধ্যমে নিজেদের সামাজিক
    দায়িত্বশীলতা পালন করে চলেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় এই প্রতিষ্ঠান।
     

    এস আলম গ্রুপ চট্টগ্রামেরই একটি শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ। এ গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম
    মাসুদ সাহেব একজন মানবিক ও চট্টলপ্রেমী শিল্পপতি হিসেবে পরিচিত। এই এ শিল্পগ্রুপের কাছে
    চট্টগ্রামবাসীর প্রত্যাশাও বেশি। কর্মসংস্থান ও স্বাস্থ্যের পাশাপাশি এ শিল্প গ্রুপের কাছে শিক্ষা ও
    আবাসন খাতে আরো অবদান আশা করে করে চট্টগ্রামের মানুষ। এছাড়া নিজেদের প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত নিত্যপণ্য সামগ্রী বিশেষ পরিস্থিতে সুলভমূল্যে কম সুবিধাভোগীদের নিকট বিতরণ করা যায় কিনা বিষয়টিও মানবিকতার জায়গা থেকে বিবেচনা করা যেতে পারে। এ শিল্পগ্রæপের শুভার্থীদের অনেকেই এমনটি প্রত্যাশা করেন।

    লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

    প্রকাশিত মঙ্গলবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
    প্রকাশিত মঙ্গলবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩