• সর্বশেষ আপডেট

    ধর্ষণের মামলা তুলে নিতে ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি, গ্রেফতার ১


    চট্টগ্রাম: ধর্ষণের মামলা তুলে নিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকির অভিযোগে মোনজুরুল কাজী (৫০) নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

    বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন র‍্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) মো. নুরুল আবছার।

    গ্রেফতার মোনজুরুল কাজী নরসিংদী জেলার সদর থানার পুরান পাড়ার মৃত মো. আলফাজ উদ্দিন কাজীর ছেলে। তিনি নগরের বন্দর থানার বাদামতলা কলসী দীঘির পাড় এলাকায় বসবাস করেন।  
    র‌্যাব জানিয়েছে, ভুক্তভোগী একজন গার্মেন্টস কর্মী। প্রায় ১৬ বছর আগে ভুক্তভোগীর বাবা মারা যাওয়ার পর তিন বোনকে নিয়ে তার মা আবার বিয়ে করেন। সেই সংসারে ১১ বছরের একটি বোন রয়েছে। ভুক্তভোগীকে সৎ বাবা নানা সময় আপত্তিকর কু-প্রস্তাব দিত। মা বিষয়টি বুঝতে পেরে তাকে অন্যত্র বিয়ে দেন। কিন্তু সৎ বাবা ভুক্তভোগীর স্বামীর কাছে তার চরিত্র নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কু-রুচিপূর্ণ কথা বললে একপর্যায়ে তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহের সৃষ্টি হয়। পরে বিয়ে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। পুনরায় মায়ের সংসারে আসার পর ভুক্তভোগীকে গত ২৮ এপ্রিল সৎ বাবা রাতের খাবারের সঙ্গে কৌশলে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয়। খাবার খেয়ে রাতে ঘুমিয়ে পড়লে সৎ বাবা ভুক্তভোগীর শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানের ছবি মোবাইলে ধারণ করে। গত ১ মে সৎ বাবা ভুক্তভোগীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে চায় এবং রাজি না হলে তার গোপন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। গত ২ মে রাতে ভুক্তভোগী ঘুমিয়ে পড়লে সৎ বাবা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে গত ২৩ মে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এ আসামির বিরুদ্ধে মামলা মামলা দায়ের করেন।  

    র‍্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) মো. নুরুল আবছার জানান, ভুক্তভোগীকে গত ১২ জুন রাতে সৎ বাবা মোবাইলে ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবিগুলো পাঠায়। হুমকি দেয় যে, যদি তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ধর্ষণ মামলাটি তুলে না নেওয়া হয় তাহলে ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে ভুক্তভোগীকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করবে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অধিনায়ক র‌্যাব-৭ বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে নগরের বন্দর থানার কলসী দীঘির পাড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোনজুরুল কাজীকে গ্রেফতার করা হয়।  

    তিনি জানান, মোনজুরুল কাজী স্বীকার করে যে, কৌশলে ভুক্তভোগীর ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি মোবাইলে ধারণ করত। ব্লাকমেইল করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চায় এবং রাজি না হওয়ায় পরিকল্পিতভাবে তাকে ধর্ষণ করে। এছাড়া মামলা তুলে না নিলে ভুক্তভোগীকে ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থার জন্য আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

    প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার ১৬ জুন ২০২২