• সর্বশেষ আপডেট

    ডায়াবেটিসে প্রিভেনশন ও এডুকেশনের বিকল্প নেই জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ

      


    ডায়াবেটিস প্রিভেনশন এডুকেশন প্রোগ্রাম (ডিপেপ) আয়োজিত বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস ও (ডিপেপ)' র প্রথম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে  আলোচনা সভা ১২ নভেম্বর সোমবার রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউর মোহনা হল রুমে বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে। 

    অপসোনিন ফার্মা লিমিটেড এর সহযোগীতায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে চট্রগ্রাম বিভাগের স্বাস্থ্য পরিচালক ডা হাসান শাহরিয়ার কবির এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় ডা এ কে আজাদ খাঁন, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন যথাক্রমে চট্রগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা মোঃ ইলিয়াছ চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ শহীদুল ইসলাম ও বিশিষ্ট শিল্পপতি মাষ্টার আবুল কাসেম, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি ডা তাহের ও
    (ডিপেপ) এর মেম্বার সেক্রেটারি ও আনোয়ারা ডায়াবেটিস হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. লিয়াকত আলী চৌধুরী সহ প্রমূখ। 

    মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) এর ডায়াবেটিস ও হরমোন রোগ বিশেষজ্ঞ এবং ডায়াবেটিস প্রিভেনশন এডুকেশন প্রোগ্রাম এর প্রতিষ্ঠাতা ডা শাহরিয়ার আহমেদ মিলন। 
    অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা আনোয়ার খাঁন মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা তামান্না মাহমুদ উর্মী। 
    চিকিৎসা সেবায় বিশেষ অবদান রাখায় আজীবন সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়েছে ডায়াবেটিস ও হরমোন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা আব্দুস সালেক মোল্লা ও অধ্যাপক ডা তৌহিদুল আলমকে।

    মূখ্য আলোচনায় ডিপেপ এর প্রতিষ্ঠাতা ডা শাহরিয়ার আহমেদ মিলন বলেন, ডায়াবেটিস প্রিভেনশন এডুকেশন প্রোগ্রাম ২০২০ সালের ১৪ই নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসে প্রতিষ্ঠিত হয়। যখন কোভিড১৯ আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বে এক মহামারী রূপ ধারন করে, বহু লোক আক্রান্ত হয়, বহু লোক মৃত্যু বরণ করে, পাশাপাশি এই কোভিড এর কারণে ডায়াবেটিস এর হার অতি মাত্রায় বেড়ে যায় তার কারণ মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারেনি, ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ করতে পারে নি,মানুষের মানসিক চাপ ছিল পাশাপাশি এ ভাইরাস নিজেও ডায়াবেটিক তৈরি করে, যেমন কোভিড হওয়ার পর থেকে মানুষের ইন্টার্নাল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিয়ে টাইপ ১ ও টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ডেবলপ করতো। দেখা যাচ্ছিল হসপিটালে কোভিড আক্রান্ত ভর্তি রোগীদের মধ্যে শতকরা প্রায় ৪০ শতাংশ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বা আলটিমেটলি ডায়াবেটিস আক্রান্ত হয়ে যেত। শুধুমাত্র করোনা ভাইরাসের কারণে নয় ভাইরাস প্রতিরোধ করার জন্য ওই সময় যে সমস্ত ওষুধ ব্যবহার করা হয়েছিল এন্টিভাইরাস ড্রাগ গুলোর কারণেও ডায়াবেটিসের হার বেড়ে যায় বা যেত। 

    এসকল বিষয় পর্যবেক্ষণে রেখে আমার মাথায় আসলো যে, এবার তো মনে হয় ডায়াবেটিসই বড় মহামারী হিসেবে রূপ নিয়ে ফেলতে পারে, এমনিতেই ডায়াবেটিস আমাদের দেশসহ তৃতীয় বিশ্বের জন্য বিশাল হুমকি, এক্ষেত্রে আমাদের দেশের জনগণকে সচেতন করা উচিৎ। সেক্ষেত্রে প্রিভেনশন এবং এডুকেশন এই দুটি শব্দকে মাথায় রেখে আমরা একটি প্রোগ্রামের আয়োজন করি যার নাম ডায়াবেটিস প্রিভেনশন এডুকেশন প্রোগ্রাম যার ফাউন্ডার এবং কনভেনার আমি ডা  শাহরিয়ার আহমেদ মিলন ও সেক্রেটারি হলো আনোয়ারা ডায়াবেটিস হসপিটালের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. লিয়াকত আলী চৌধুরী এবং জয়েন কনভেনার হচ্ছেন ডা. আরশাদুল আলম কনসালটেন্ট চট্টগ্রাম ডায়াবেটিস হাসপাতাল। 
     
    ডা শাহরিয়ার আহমেদ মিলন আরও বলেন, এই প্রোগ্রামটির লক্ষ এবং উদ্দেশ্য হচ্ছে যে, ডায়াবেটিস কে প্রতিরোধ করা আর ডায়াবেটিস কে ৩ ভাবে প্রতিরোধ করা যায় তার মধ্যে একট হলো, প্রাইমারী প্রিভেনশন মানে ডায়াবেটিস যাতে না হয়, দ্বিতীয়টি হলো সেকেন্ডারি প্রিভেনশন মানে ডায়াবেটিস এর জটিলতা যেনো রোধ করা যায়, তৃতীয়টি হলো জটিলতা যদি হয়েও যায় সেই জটিলতার যেনো কোনো প্রকার উন্নতি বা প্রোগ্রেস না হয়। 

    এই প্রিভেনশনগুলোর ব্যাপারে জনগণকে সচেতন করতে হবে, কারণ প্রিভেনশনের কোনো বিকল্প নাই। প্রিভেনশন ইজ দ্যা বেস্ট ওয়ে টু কনট্রোল ডায়াবেটিস। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এডুকেশন, মানুষকে মোটিভেশন করতে হলে এডুকেশন এর বিকল্প নেই। থেরাপিটিক এডুকেশন
    অন্যতম পথ যেমন কিভাবে ইনসুলিনের প্রয়োগ করতে হবে, ফুট কেয়ার, কিভাবে ডায়েট ম্যানেজ করতে হয়, নিউট্রিয়েশন, স্বল্প মূল্যের কি কি ওষুধ ব্যবহার করা যায়, সরকারী বা বেসরকারি পর্যায়ে কিভাবে অল্প খরচে ডায়াবেটিস চিকিৎসা করা যায়, ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ, ফুড হ্যাবিটস ইত্যাদি বিষয়ে এডুকেশনের মাধ্যমে জনসচেতনতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। 

    আমাদের প্রতিপাদ্য হলো, 'এক্সেস টু ডায়াবেটিস কেয়ার'
    এ পর্যন্ত আমরা বিভিন্ন হাসপাতালে ডায়াবেটিস রোগীদের অপারেশনাল চিকিৎসায় অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য প্রচার, দারিদ্র রোগীদের সু- ব্যবস্থা যেনো পাই সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা, চিকিৎসকদের ডায়াবেটিস রোগীদের সবার আগে চিকিৎসা করার জন্য উদ্ধুদ্ধ করা ছাড়াও ডায়াবেটিস রোগীদের আরো কিছু সুযোগ সুবিধার বিষয়াদি নিয়ে ডায়াবেটিস প্রিভেনশন এডুকেশন সকলের প্রচেষ্টায় দীর্ঘ ১ বছর আগে থেকে অব্যাহত রেখে আজ আরও এগিয়ে যাওয়ায় প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করছি। 

    ডা শাহরিয়ার আহমেদ মিলন পরিশেষে বলেন, 
    সামনে আরো ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা রয়েছে, বিশেষ করে বন্দর নগরী আমাদের চট্টগ্রামে ডায়াবেটিসের চিকিৎসা সেবা অপ্রতুল তাই চট্টগ্রাম দিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু করে দেশ ব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিতে চাই এবং চট্টগ্রামে একটি তথা দেশের প্রথম একটি ডায়াবেটিস কেয়ার ইনিস্টিউট স্থাপনের স্বপ্ন নিয়ে কাজ করছি যার জন্য সচেতন নাগরিক এবং সরকারের আন্তরিকতা কামনা রইল।

    প্রকাশিত: শুক্রবার ১২ নভেম্বর ২০২১