• সর্বশেষ আপডেট

    টিকটক তারকা জিনিয়ার অন্ধকার জীবন

      

    তিন শিক্ষার্থী নিখোঁজের ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াবা সেবন ও একাধিক প্রেমের কথা স্বীকার করেছেন টিকটক জিনিয়া। স্থানীয় বাসিন্দা আলম বেপারি জানান, জিনিয়ার পরিবার আগে বস্তিতে ভাড়া থাকতো। এখন মিরপুর ১১ নম্বর এভিনিউ ফাইভের ১৫ নম্বর লাইনের একটি বাসায় ফ্ল্যাট নিয়ে ভাড়া থাকেন। কিছুদিন আগে তার বাবা মারা যান। তিনি কবিরাজি করতেন।

    স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, কবিরাজ বাবা মারা যাওয়ার পরই আরও বেপরোয়া জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন এ টিকটক তারকা। তার পরিবারে উপার্জনক্ষম কোনো ব্যক্তি নেই। বড় ভাই থাকলেও সে বেকার। জিনিয়া পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সবার ছোট। এলাকায় সবাই জানে ও টিকটক করে আর বিদেশে লোক পাঠায়। আবার মানুষকে বিভিন্ন জায়গায় চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়। ওর বড়বোনকেও কবিরাজি শিখিয়েছে ওর বাবা। ওই বোনের ইনকামে তাদের পরিবার চলে।

    স্থানীয়রা জানান, জিনিয়া অনেক স্টাইলিশ। কয়েক দিন পরপরই নতুন নতুন ড্রেস পরে। ওর অনেক বয়ফ্রেন্ড। মাঝে মধ্যে বয়ফ্রেন্ডদের নিয়ে মহল্লায় ঝগড়া-বিবাদ হতো। এদিকে, তিন কলেজছাত্রী নিখোঁজের ঘটনায় তাদের প্রত্যেকের বাসায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল জিনিয়ার। নিখোঁজ তিন শিক্ষার্থীর পরিবারের পক্ষ থেকে করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মিরপুরের পল্লবীর ব্লক-সি, সেকশন-১১ তে প্যারিস রোডের ৭১-তে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিখোঁজ শিক্ষার্থী নিশা বসবাস করতেন। নিশা মিরপুর গার্লস আইডিয়াল কলেজের দ্বাদশ বিজ্ঞান বিভাগে পড়ালেখা করেন। পড়ালেখার সুবাদে আসামি মো. তরিকুল্লাহ, তার বড় ভাই মো. রকিবুল্লাহ, জিনিয়া ওরফে টিকটকার জিনিয়া রোজ ও শরফুদ্দিন আহম্মেদ অয়নদের সঙ্গে নিশাসহ তার অপর দুই বান্ধবী স্নেহা আক্তার এবং কানিজ ফাতেমার সঙ্গে পরিচয় হয়। মামলার তৃতীয় আসামি টিকটক জিনিয়া রোজ প্রায় সময় নিশাদের বাসায় যাতায়াত করতেন। মাঝে মধ্যেই তরিকুল্লাহ এবং জিনিয়া নিশাদের বাসায় এসে বেড়াতে যাওয়ার জন্য বাসার বাইরে নিয়ে যেতেন।

    ঘটনার দিন গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে নিশার বোনের মেয়েকে তার মায়ের কাছে রেখে যেতে আসলে তখন নিখোঁজ শিক্ষার্থী স্নেহা এবং কানিজ ফাতেমার মা’সহ তাদের পরিবারের সদস্যরা বাসায় আসেন। এ সময় নিশা এবং তার বান্ধবীর মায়েরা জানান, শিক্ষার্থীদেরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরবর্তীতে প্রতিবেশী এবং নিকটাত্মীয়দের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে খুঁজে না পেয়ে আসামি তরিকুল্লাহ, রকিবুল্লাহ এবং জিনিয়ার প্রতি নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে রাত ৮টার দিকে নিশার মা বাসার আলমারি খুলে দেখতে পান তার হজে যাওয়ার জন্য রাখা নগদ ৬ লাখ টাকা এবং ৮০ হাজার টাকা মূল্যমানের স্বর্ণালঙ্কার, নিশার স্কুল সার্টিফিকেট এবং জন্মসনদ কিছুই নেই।

    এদিকে নিশার বান্ধবী স্নেহার বাবা এসে জানান, বাসা থেকে তার মেয়ে নগদ ৭৫ হাজার টাকা, আড়াই ভরি স্বর্ণালঙ্কার, স্কুল সার্টিফিকেট, জন্মনিবন্ধন নিয়ে গেছে। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার দিন সকাল ৯টায় আসামিরা মিলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তাদের সহযোগীদের নিয়ে একটি অজ্ঞাত নম্বরের সাদা মাইক্রোবাসে উঠিয়ে তাদেরকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে তাদেরকে ফুসলিয়ে অপহরণ করে নিয়ে গেছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।


    প্রকাশিত: বুধবার ০৬ অক্টোবর ২০২১