• সর্বশেষ আপডেট

    চাঁদপুরে ৪ জন নিহতের কথা জানালেন ডিআইজি আনোয়ার

      


    কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন অবমাননার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় চার জনের নিহতের কথা জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় সাত জনকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

    বুধবার (১৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাজীগঞ্জ পৌর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়। পূজা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিজিবি সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।

    বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে চার জন নিহতের কথা নিশ্চিত করেছেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়েছে। সম্পদের ওপর আঘাত এসেছে, মানুষের জীবনের ওপর আঘাত এসেছে। এ অবস্থায় পরিস্থিতির আলোকে যারা শৃঙ্খলারক্ষার দায়িত্বে ছিলেন তারা আত্মরক্ষায় এবং জানমালের নিরাপত্তায় ফায়ার করেছে। সর্বমোট চার জন নিহত হয়েছে। সাত জনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় ১৯ পুলিশসহ ৩০ জন আহত হয়েছে।

    নিহতরা হলেন টাইলস মিস্ত্রি চাপাইনবাবগঞ্জের সুন্দরপুর বাগডাঙা এলাকার শামসুর রহমানের ছেলে মো. বাবলু (৩৫), হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের রান্ধনী মোড়ার তাজুল ইসলামের ছেলে আল আমিন (১৮), একই এলাকার মো. ফজলুর ছেলে ইয়াছিন হোসেন হৃদয় (১৪) ও পৌরসভার রান্ধনীমোড়ার বাচ্চুর ছেলে মো. শামীম (১৯)।

    এদিকে, এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

    হাজীগঞ্জ থানার ওসি হারুনুর রশিদ বলেন, বুধবার রাতে হাজীগঞ্জ পৌর এলাকায় তৌহিদী জনতার ব্যানারে মিছিল বের করে লক্ষ্মীনারায়ণ আখড়ায় হামলা চালানো হয়। এ সময় তাদের বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। তখন পুলিশ গুলি চালায়। এতে চার জন নিহত ও পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়।

    তিনি আরও বলেন, বর্তমানে হাজীগঞ্জ বাজারের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

    হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এসএম শোয়েব আহমেদ চিশতী বলেন, হাসপাতালে ১০ জন গুরুতর আহত অবস্থায় আসেন। তাদের কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করা হয়।

    সিভিল সার্জন ডা. সাখাওয়াত উল্যাহ বলেন, তিন জন নিহতের বিষয়টি হাসপাতালে রেকর্ড করা আছে। অপর জনের রেকর্ড নেই। এর মধ্যে দুই জন ঘটনাস্থলে মারা গেছেন, অপরজনকে হাসপাতালের নেওয়ার পর মৃত্যু হয়। এ ছাড়া ১৯ জন পুলিশ সদস্যসহ ২৯ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

    পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, সংঘর্ষে আমাদের বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। চার জন নিহত হয়েছেন।

    জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, বিজিবি মোতায়েন হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

    হাজীগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রুহি দাস বণিক বলেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে একটি মিছিল নিয়ে মন্দিরে হামলা চালালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যায়।


    প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার ১৪ অক্টোবর ২০২১