• সর্বশেষ আপডেট

    আমানতের ১১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ: সেই মান্নান কারাগারে

      


    সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের তিন মাস পর ১১০ কোটি টাকা মানিলন্ডারিং মামলায় বাগেরহাট আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন আলোচিত ‘নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবাদুল মান্নান তালুকদার।

     রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে বাগেরহাট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে বিচারক স্বপন কুমার সরকার জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর  নির্দেশ দেন।

    দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মিলন কুমার ব্যানার্জী এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, আজ সকালেই চিফ জুডিশিয়াল কোর্টে আবদুল মান্নান তালুকদার আত্মসমর্পণ করেন। বিচারক এই সময় তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। লকডাউনের সময় আদালত বন্ধ থাকায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণ করেননি বলে আদালতকে জানিয়েছেন তিনি।

    জানা গেছে, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারকের আপিল বেঞ্চ গত ৩ জুন এক আদেশে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিতাদেশ দিয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই সময় আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান ও আসিফ হোসেন। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস ও আশরাফ আলী।

    উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩০ মে বাগেরহাট সদর মডেল থানায় ‘নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড’র এমডি আবদুল মান্নান তালুকদার ও চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে ১১০ কোটি ৩১ লাখ ৯ হাজার ১৩৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন, অপরাধলব্ধ আয় স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগে মামলা করে দুদক।

    এজাহারে বলা হয়, কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ১০ কোটি টাকা। কোম্পানির মোট এক হাজার শেয়ারের মধ্যে আবদুল মান্নান তালুকদার ৮৫০, চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান ৫০, তার মা সালেহা বেগম ও স্ত্রী জেসমিন নাহার ৫০টি করে ১০০টি শেয়ারের মালিক। প্রকৃতপক্ষে নিউ বসুন্ধরার চেয়ারম্যান হিসেবে আনিসুর রহমানের নাম থাকলেও প্রতিষ্ঠানটির সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করেন এমডি আবদুল মান্নান তালুকদার। ২০১০ সালে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী (এমএলএসএস) আবদুল মান্নান তালুকদার স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে ‘নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড’ নামের একটি জমি কেনাবেচার প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলার পর তিনি গ্রাহকদের প্রতি লাখে মাসে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রলোভন দেখান। তিনি বাগেরহাট, খুলনাসহ বেশ কয়েকটি জেলার অন্তত ২০ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে কমপক্ষে ২৯৯ কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেন, যা ব্যাংকিং আইনের পরিপন্থি।

    কয়েক বছরে বাগেরহাটের ১৬টি ব্যাংকের ৩০টি হিসাবে (অ্যাকাউন্ট) ১১০ কোটি ৩১ লাখ ৯ হাজার ১৩৫ টাকা ৫৮ পয়সা জমা করেন আবদুল মান্নান। গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া এই বিপুল পরিমাণ অর্থ তিনি ব্যাংক থেকে তুলে পাচার করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ মামলায় জামিন চেয়ে আবেদন করলে গত বছরের শেষের দিকে আসামিদের জামিন দেয় হাইকোর্ট। জামিন পেয়ে কারামুক্তও হন তারা। এর মধ্যে দুদক ওই জামিনের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে। চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল আনিসুর রহমানকে আত্মসমর্পণ করতে বলেন আপিল বিভাগ। সে অনুসারে তিনি আত্মসমর্পণ করে এখন কারাবন্দি।


    প্রকাশিত: রবিবার ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১