• সর্বশেষ আপডেট

    ভিটেমাটি হারিয়ে দিশেহারা নদীর তীরের মানুষ

    ভিটেমাটি হারিয়ে দিশেহারা নদীর তীরের মানুষ

    মাসুদ রানা, রাজারহাট,(কুুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলায় তিস্তা নদীর পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিস্তা নদী নিয়ে সরকারের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগেই ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। এবারেও তীব্র নদীভাঙনে রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াশাম, চরগতিয়াশাম ও বগুড়াপাড়া গ্রামে মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ৫ শতাধিকসহ দুই ইউনিয়নের ১০ গ্রামে এক মাসে সহস্রাধিক মানুষ গৃহহারা হয়েছে।

    কুড়িগ্রাম পাউবো সূত্রে জানা গেছে, স্থায়ীভাবে ভাঙন প্রতিরোধ কল্পে সরকার একটি মেগা প্রকল্প গ্রহণ করেছে, যা বাস্তবায়ন হলে ভাঙন প্রতিরোধসহ নদীপাড়ের বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে আমূল পরিবর্তন আসবে। তবে দীর্ঘদিনেও ওই প্রকল্পের কাজ শুরু না হওয়ায় প্রতিনিয়ত নদীভাঙনের শিকার হচ্ছেন নদীতীরবর্তী বাসিন্দারা।

    উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে নদীভাঙনের তীব্রতা বেড়েই চলছে। ইতোমধ্যে উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের খিতাবখাঁ, বুড়িরহাট, গতিয়াশাম, চরগতিয়াশাম, শরিষাবাড়ি, বগুড়াপাড়া এবং বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের রামহরি, কালির মেলা, চতুরা, গাবুর হেলান, রতি, তৈয়বখাঁ, চরবিদ্যানন্দসহ ১০টি গ্রামের বিভিন্ন স্থানে সহস্রাধিক মানুষ গৃহহারা হয়েছে। মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে গতিয়াশাম, চরগতিয়াশাম ও বগুড়াপাড়া গ্রামে নদীতে ৫ শতাধিক মানুষের বসতভিটা, স্থাপনা, দুই শতাধিক একর ফসলি জমি, আড়াই কিলোমিটার রাস্তা নদীতে বিলীন হয়েছে। অব্যাহত ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে নদীপাড়ের মানুষদের।

    এছাড়া তীব্র ভাঙনের কারণে হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে তৈয়বখাঁ বাজার, কালিরহাট বাজার, বুড়িরহাট বাজার, তৈয়বখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ২০টি প্রতিষ্ঠান, নানা স্থাপনা ও ফসলি জমি। দিনের পর দিন ভাঙনে হারিয়ে যাচ্ছে দুটি ইউনিয়নের মানচিত্র। জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে যেকোনো মুহূর্তে নদীতে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে এসব প্রতিষ্ঠান।

    ভাঙন আতঙ্কে অনেকে গ্রাম ছেড়েও চলে যাচ্ছেন অন্যত্র। এমতাবস্থায় তারা স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধে সরকারের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানান।

    চরগতিয়াশাম, বগুড়াপাড়া গ্রামে গিয়ের দেখা যায়, ওই গ্রামের মানিক মিয়ার (৬৫) আধাপাকা বিল্ডিং বাড়িটি নদীতে বিলীন হওয়ার পথে। এখন তারা নিজেরাই বাড়িটি ভেঙে টিন, ইট, রডসহ অন্যান্য সামগ্রী সরিয়ে ফেলছে।

    ইউএনও নুরে তাসনিম জানান, ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১ লাখ টাকা ও ১ টন চাল বরাদ্দ পেয়েছি, তালিকা হচ্ছে, দুই-একদিনের মধ্যে দেওয়া হবে।

    কুড়িগ্রাম পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান বলেন, গতিয়াশাম, চরগতিয়াশাম গ্রামে গত জুলাই মাসে টানা ৫ দিন ভাঙন প্রতিরোধে কাজ করার পর ওই এলাকার লোকজন পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকদের বেঁধে মারধরের হুমকি দেওয়ায় পরে আর কাজ করা হয়নি।

    প্রকাশিত: মঙ্গলবার ৩১ আগস্ট, ২০২১