• সর্বশেষ আপডেট

    এক ট্রিলিয়ন ডলারের উন্নয়ন!

                                    

    গত দুই দশক আফগানিস্থান শাসন করেছে ন্যাটোর ছায়া সরকার। আমেরিকার দাবী তারা সেখানে ওয়ান ট্রিলিয়ন ডলার অর্থ খরচ করেছে। শুধু আফগানিস্থানের সেনাবাহিনীর পেছনে খরচ করেছে ৮৯৯০ কোটি ডলার! উচ্চ বিনিয়োগ বটে! বিশ্ব কি দেখলো আজ! তালেবানদের এক থাবায় সেই সবাই পালিয়ে গেলো। বিনিয়োগটা আস্ত জলে গেলো।

    দুর্নীতিবাজ  সরকার প্রধান টাকার থলে নিয়ে পালিয়ে গেলো! এত উন্নয়ন হয়েছে যে,হিউম্যান ডেভেলাপ ইনডেক্সে আফগানিস্থান পেছন দিক থেকে প্লেস করেছে। মাথাপিছু আয় মাত্র পাঁচশ ডলার বা তারও কম। আড়াইলক্ষ বর্গমাইলের একটা দেশ, প্রায় সোয়া তিন কোটি মানুষ তাদের, মাত্র ২০-২১ বিলিয়ন সাইজের একটা অর্থনীতি। এটাই হলো বিশ বছর ধরে গড়া একটা অর্থনীতি।
    হুম, সাথে আরো কিছু আছে,  আন্তর্জাতিক মানের একটা ক্রিকেট টিম, উরুখোলা একটা ফুটবল দল।

    একাকী পথ চলতে পারা ও অফিস আদালতে কাজ করতে পারার এক গোছা নারী স্বাধীনতা। 
    সিনেমা হল ও ড্রয়িং রুমে বসে হিন্দী বা ইংরেজী ফিল্ম দেখার উপযোগী বাক-স্বাধীনতা এবং ঝগড়া ঝাটি কারচুপি ও দোষারূপ সংস্কৃতির একটি গণতন্ত্র। এটাই এক ট্রিলিয়ন ডলারের উন্নয়ন।

    এ টাকায় কটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হয়েছে, কত লোক শিক্ষার আলোতে আলোকিত হয়েছে, কটা নতুন হসপিটাল হয়েছে, মিলেনিয়াম ডেভেলাপমেন্ট গোলে কি কি অবদান রেখেছে তার হিসাব চাওয়া বোকামী। 

    এতই যদি উন্নয়ন হয় বিশ বছর পরও কাবুলি মনটা তালেবানি থেকে গেলো কিভাবে।
    মুলত সবই ছিলো পাশ্চ্যত্যের ধাপ্পাবাজি। ট্রিগ্রার হ্যাপি যুদ্ধবাজ জুনিয়র বুশের ক্রোধের শিকার হলো আফগানিস্থান । তারা সেখানে মরণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে শত শত নিরীহ আফগানের প্রাণের বিনিময়ে। স্বাধীনচেতা একটা জাতিকে বেশীদিন গিনিপিগ বানিয়ে রাখা যায় না। দালাল ও তাবেদার সরকার দিয়ে জনগনের কল্যাণ করা সম্ভব না।

    আজকের আফগানিস্থান তার বাস্তব উদাহরণ। আমেরিকার ভুল নীতির কারণেই দ্বিতীয় বারের মতো তালেবান আন্দোলনের পূনুরুত্থান হয়েছে। এমনকি তালেবান সৃষ্টির পেছনের কারণও ছিলো আমেরিকানদের ভুল নীতি।

    সেই নব্বইয়ের দশকে পাশ্চাত্যরা আফগানিস্থানকে টিস্যু পেপারের মতো যদি ফেলে না যেতো ইতিহাস ভিন্নভাবে লেখা হতো। যুদ্ধের গার্বেজ থেকে তালেবান আন্দোলনের সৃষ্টি হতো না।
    সেই নির্লিপ্ততার মাসুল দিতে হচ্ছে আজ সাম্রাজ্যবাদী পরাশক্তিকে।

    তালেবানরা অতীতে যা করেছে সেটার নিন্দা বা বিরোধীতা করতে আমাদের আপত্তি যেমন নাই তেমনি আজ তারা সাম্যাজ্যবাদী দখলদার শক্তিকে যেভাবে পরাজিত করেছে সেই ঐতিহাসিক  অর্জনের জন্য তাদের কে সাধুবাদ জানাতে ও আপত্তি নাই। এই প্রাপ্তিকেবল তালেবান বা আফগান জনগনের নয় এটা সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী বিশ্বজনতার।

    লেখক ডাক্তার রেজাউল করিম

    প্রকাশিত: বুধবার ১৮ আগস্ট, ২০২১