• সর্বশেষ আপডেট

    চট্টগ্রামে গুলির শব্দ খুঁজতে গিয়ে মিললো অস্ত্র তৈরির কারখানা!


    চট্টগ্রামে গুলির শব্দ এই উৎস খুঁজতে গিয়ে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে মিললো পুরো একটি অস্ত্র কারখানার খোঁজ।  (চসিক) নির্বাচনের  এক দিন পর বৃহস্পতিবার ওই অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পান ডবলমুরিং থানার পুলিশ।

    বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ বংশালপাড়ায় একটি গুলির শব্দ শুনে তার উৎস খুঁজতে বের হয় ডবলমুরিং থানা পুলিশ।  সেই স্থানে গিয়ে শুধু গুলি বা অস্ত্র নয় পাওয়া গেল  অস্ত্র তৈরির পুরো এক কারখানা।

    এসময় এক নারীসহ অস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির বিপুল সরঞ্জাম উদ্ধার করে ডবলমুরিং থানা পুলিশ।

    এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়ার মেহেরুন্নেসা মুক্তা কারখানা মালিক নিজাম খানের স্ত্রী। নিজাম আগ্রাবাদ মোগলটুলী এলাকার সন্ত্রাসী মোস্তফা কামাল টিপুর অনুসারী বলে জানা গেছে। মোস্তফা কামাল টিপু আগ্রাবাদে যুবলীগ নেতা মারুফ চৌধুরী মিন্টু হত্যার মামলার প্রধান আসামি। তিনি গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকলেও পরে জামিনে বেরিয়ে এসেছেন।


    শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) ডবলমুরিং থানায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে অস্ত্র কারখানার বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করেন সিএমপির উপকমিশনার (পশ্চিম) ফারুক উল হক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অস্ত্র কারখানা আবিস্কারে নেতৃত্ব দেওয়া ডবলমুরিং মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন।

    একটি গুলির উৎস খুঁজতে গিয়ে আগ্রাবাদে বেরিয়ে এলো অস্ত্রের ফ্যাক্টরি 1
    সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গুলির শব্দের উৎস খুঁজতে ওসি মোহাম্মদ মহসীনের নেতৃত্বে একটি টিম নগরীর বংশালপাড়া এলাকার ঘটনাস্থলে যান। সেখানে প্রায় তিন ঘণ্টা অভিযানের পর গুলির শব্দের উৎস চিহ্নিত করতে তারা সমর্থ হন। এ সময় বংশালপাড়ার গফুর খান সওদাগরের বাড়ির ছাদের একটি কক্ষে মেলে অস্ত্র তৈরির কারখানা। সরঞ্জামগুলো একটি কবুতরের ঘরে লুকানো ছিল।

    এই কারখানার মালিক মোহাম্মদ নিজাম খান। ভোট নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে তিনিই শাহ আলম নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করেন। কিন্তু গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে শাহ আলম বেঁচে যান। গুলির শব্দে চারদিকে মানুষজন বের হলে নিজাম পালিয়ে যান।

    উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে দুটি পাইপগান, একটি এয়ারগান, একটি ওয়েল্ডিং মেশিন, একটি গ্রেডিং মেশিন, একটি ওয়েল্ডিং হোল্ডার, একটি আরথিং কেব্ল, একটি বিদেশি কাটার, একটি রিপিট গান মেশিন, সাতটি এসএস পাইপ, একটি এসএস বক্স পাইপ, একটি স্টিলের তৈরি দোনালা ব্যারেল, প্লাস্টিকের তৈরি সবুজ রঙের একটি অস্ত্রসদৃশ বস্তু, একটি লোহার ছেনি।

    এছাড়া আরও পাওয়া গেছে একটি কাঠের হাতলযুক্ত বাটাল, দুটি হাতুড়ি, একটি স্প্রিং প্লাস, একটি নোজ প্লাস, একটি স্প্রিং তৈরির প্লাস, একটি লোহার তৈরি পাইপ রেঞ্জ, ১১টি বিভিন্ন সাইজের লোহার পাইপ, একটি ড্রিল মেশিন, একটি স্টিলের গ্রিপ প্লাস, দুটি করাত, ১৮টি বিভিন্ন সাইজের স্প্রিং, দুটি সাদা রঙের কাগজের তৈরি আগ্নেয়াস্ত্রের নকশা, একটি প্লাস্টিকের বাঁটযুক্ত ছোরা এবং একটি কাটি।

    মূলত, ওই কারখানায় পাইপগানের মতো অস্ত্র তৈরি হতো। এ ব্যাপারে ডবলমুরিং থানায় অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়েছে।

    ডবলমুরিং মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে বংশালপাড়া এলাকায় একটি গুলির শব্দ শোনা যায়। সেই গুলির শব্দের উৎস খুঁজতে গিয়েই এ কারখানার সন্ধান মেলে। আমরা একজনকে গ্রেপ্তার করতে পারলেও মূল হোতাসহ আরও দুজন পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

    প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২১