• সর্বশেষ আপডেট

    ছাত্রলীগ সভাপতিকে বিবস্ত্র করে ভিডিও করার নির্দেশ সম্পাদকের


    শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) শাখা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. রুহুল আমিনকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ভাইরালের নির্দেশ সংবলিত একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয়েছে।

    ফাঁস হওয়া অডিওতে শোনা যায়, শাবি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান তার অনুসারী উপদপ্তর বিষয়ক সম্পাদক সজিবুর রহমানকে কথোপকথনের একপর্যায়ে এমন নির্দেশ দেন।

    দুই মাস আগের কথোপকথনগুলো ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে বাকি অডিওগুলো যাতে ভাইরাল না হয়, সেজন্য উপদপ্তর সম্পাদককে দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার নাটকও ইমরান খান করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

    দুই মাস আগের ২২ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের ওই অডিওর একপর্যায়ে শোনা যায়, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. রুহুল আমিনকে ক্যাম্পাস ছাড়া করার জন্য তাকে গেস্টরুমে নিয়ে বিবস্ত্র করে ছবি তুলতে বলা হয়। পরে সেটি ভিডিও করে রেখে দিতে সজিবুর রহমানকে নির্দেশ দেন ইমরান খান।

    অডিওর ১৪ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডে ইমরান খান ও সজিবুর রহমানের কথোপকথনে শোনা যায়, ‘রুহুল ২৮ তারিখ ক্যাম্পাসে আসলে গেস্ট রুমে নিয়ে গিয়ে বিবস্ত্র করতে পারবে কিনা সে বিষয়ে সজিবুর রহমানকে প্রশ্ন করা হয়। বিবস্ত্র করার পর সালাম দিয়ে তাকে আর ক্যাম্পাসে না আসার কথাও ওই অডিওতে বলা হয়।

    অডিওতে সজিবুর রহমানকে রুহুলের বিবস্ত্রহীন অবস্থায় একটি ভিডিও করে রাখার কথা বলা হয়। আর ভাইরাল হওয়া্ ওই অডিওেতে ইমরান খান বলেছেন, ‘জুতার বাড়ির ভিডিওটা তিনি করে রেখে দিয়েছেন, দুইটা একত্রে করে বাজারে ছেড়ে দিলে…।’

    প্রসঙ্গত, সেপ্টেম্বরের ২৮ তারিখ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে ক্যাম্পাসে যাতে রুহুল আমিন প্রোগ্রাম না করতে পারে, এ জন্য এ নির্দেশ দেন ইমরান খান। পরে ২৮ সেপ্টেম্বর মিলাদ মাহফিলের দোয়া চলাকালীন রুহুল আমিনকে মসজিদ থেকে তুলে নিয়ে যান ইমরান খানের অনুসারীরা।

    এদিকে গত সপ্তাহে এ কথোপকথন ফাঁসের পর ফেসবুকে পোস্ট করে আত্মহত্যার ঘোষণা দেন উপদপ্তর বিষয়ক সম্পাদক সজিবুর রহমান। সব ধরনের নোংরা রাজনীতি তার সঙ্গে করা হচ্ছে বলেও তিনি পোস্টে উল্লেখ করেন। পোস্ট দেওয়ার কিছুক্ষণ পর তিনি বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান বলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জানান তার রাজনৈতিক সহযোগীরা। তবে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান বলেন, সজীব ৪০টি ঘুমের ওষুধ খেয়েছিল।

    কিন্তু ইমরান খানের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ মহলের অধিকাংশ নেতাকর্মীই মনে করছেন, অডিও ফাঁসের পর ঘটনাকে অন্যদিকে প্রবাহিত করতেই এ আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়েছে।

    তবে সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান বলেন, ‘সজীবকে তিন মাস আগে অপহরণ করে মোবাইল থেকে অডিও নিয়ে জোড়াতালি দিয়ে এ অডিও প্রকাশ করা হচ্ছে। অডিওর কিছু সত্য, কিছু মিথ্যা। আর সজীবের আত্মহত্যার চেষ্টার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর। এটিকেও যারা নাটক বলছে, তাদের মনমানসিকতায় সমস্যা রয়েছে। অলরেডি সজীবের অপহরণের বিষয়ে একটা মামলা চলমান আছে। সজিব এখনও অসুস্থ, সুস্থ হলে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।’

    অন্যদিকে শাখা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. রুহুল আমিন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।


    প্রকাশিত: বুধবার, ০৯ ডিসেমম্বর, ২০২০