• সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ

    হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার চির ঐতিহ্যের নিদর্শন মাটির ঘর


    মোঃ আল-আমিন, ঝালকাঠিঃ- ঝালকাঠি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার চির ঐতিহ্যের নিদর্শন সবুজশ্যামল ছায়া-ঘেরা শান্তির নীড় মাটির ঘর।)যা এক সময় ছিল গ্রামের মানুষের কাছেমাটির ঘর গরীবের এসি বাড়ি নামে পরিচিত। কিন্তু কালের আর্বতে আজ হারিয়েযাচ্ছে মাটির ঘরগুলো।)মাটির ঘরের কদর কমিয়ে দিয়েছে সাম্প্রতিক বন্যা আরপ্রাকৃতিক দুর্যোগ। এই মাটির ঘর ঠান্ডা থাকায় এক সময় এটাকে গরীবেরশীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরও বলা হতো।

    এ ঘর গরমের সময় আরামদায়ক। তাই অনেক গ্রামেইবিত্তশালীদেরও দোতলা মাটির ঘরও ছিল। এখনও এ অঞ্চলের অনেক গ্রামে রয়েছে)অথচঝালকাঠি ৪ টি উপজেলায় কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর। ঝড়-বৃষ্টি থেকে বাঁচার পাশাপাশি তীব্র গরম ও কনকনে শীতে আদর্শ বসবাস-উপযোগীমাটির তৈরি এসব ঘর আগের মতো এখন আর তেমন একটা নজরে পড়ে না। শুধু মাটিরবাড়িই নয়, ছিল ধান-চাল রাখার জন্য মাটির তৈরী গোলা ঘর ও কুঠি।সরেজমিন ঘুরে দেখা) গেছে, রাজাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এক সময়প্রতিটি ঘর ছিল মাটির তৈরি।



    কিন্ত আধুনিকতার স্পর্শে এখন মানুষের জীবনযাত্রারমান বেড়েছে। গ্রামে গ্রামে পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ। গ্রামীণ অর্থনীতির গতিসচল হওয়ায় মাটির ঘরের পরিবর্তে তৈরি হচ্ছে পাকা ঘর। কয়েক বছর পর পর মাটির ঘরসংস্কারের ঝক্কি-ঝামেলা ও ব্যয়বহুল দিক পর্যবেক্ষণ করে মাটির ঘরের পরিবর্তে দালান-কোটা বানাতে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন এখানকার মানুষ। ঝালকাঠির সদর শতদশকাঠি গ্রামের গৃহিনী নাজমা)বেগম জানান, মাটির ঘরতৈরি করতে প্রথমে এঁটেল বা আঠালো মাটি কাদায় পরিণত করে দুই-তিন ফুট চওড়াকরে দেয়াল তৈরি করা হতো। ১০-১৫ ফুট উঁচু দেয়ালে কাঠ বা বাঁশের সিলিং তৈরি করেতার ওপর খড় অথবা টিনের ছাউনি দেওয়া হতো। 

    এসব মাটির ঘর তৈরি করতে কারিগরদের সময় লাগতো দেড় থেকে দু’মাস।))এক সময় আমাদের এলাকার প্রতিটা ঘর মাটিদিয়ে তৈরি করা হত। অনেকেই মাটি, বাঁশ, টিন সংগ্রহ করে নিজেরাই মাটির ঘরতৈরি করত।তিনি আরও বলেন,)ভূমিকম্প বা বন্যা না হলে একটি একটি মাটির বাড়ি শতবছরেও বেশি স্থায়ী হয়। কিন্তু বর্তমান সময়ে কালের বিবর্তনে ইটের দালানকোটা আরবড় বড় অট্রালিকার কাছে হার মানছে মাটির বাড়ি ঘর।)মাটির ঘরে)দেয়ালে কাট বাবাঁশের শিলিং তৈরি করে তার ওপর খর বা টিনের ছাউনি দেয়া হতো। মাটির বাড়ি ঘরঅনেক সময় দোতলা পর্যন্ত করা হতো। সব ঘর বড় মাপের হয়না। গৃহিনীরা বিভিন্নঅনুষ্ঠানে মাটির দেয়ালে বিভিন্ন রকমের আল্পনা এঁকে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতেন।প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও বর্ষা মৌসুমে মাটির বাড়ি ঘরের ক্ষতি হয় বলে বর্তমানসময়ে দীর্ঘ স্থায়ীত্বের কারণে গ্রামের মানুষরা ইটের বাড়ি নির্মাণের আগ্রহীহচ্ছেন।

    এদিকে সদরের পশ্চিম ঝালকাঠি আজিজুল হক এর বাড়িতে দেখা মিলেছে মাটিরতৈরি ঘর, তার কাছে জানতে চাইলে, আধুনিক যুগেও কেন তার বাড়িতে কেনই মাটির তৈর ঘর রয়েছে। এত তিনি জানান, মাটির তৈরি এই বাড়ি ঘর তারা পেয়েছেন পৈত্রিকভাবে। তাদের পূর্ব পুরুষরাও এই মাটির তৈরি বাড়িতেই জীবন কাটিয়ে গেছেন। তাইএখনও তারা এই বাড়িগুলো ভাঙ্গেনি।)) তবে মাটির বাড়ি বসবাসের জন্য আরামদায়ক হলেও যুগের পরিবর্তনেআধুনিকতার সময় অধিকাংশ মানুষ মাটির বাড়ি ভেঙে অধিক নিরাপত্তা ও স্বল্পজায়গায় দীর্ঘস্থায়ীভাবে অনেক লোকের নিবাস কল্পে গ্রামের মানুষরা ইটের বাড়ি-ঘরতৈরি করছেন বলে অনেকের ধারণা।


    gifs website


    প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ০৩ মার্চ, ২০২০