• সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ

    চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা সিডিএকে দায়ী করছেন মেয়র

     

    শ্রাবণের এমন ধারা ঝরেনি গত কয়েক বছরে। পুরো বর্ষার শেষ সময়ে এসে গত চারদিনের বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার ভয়াবহ রূপ দেখলো চট্টগ্রামবাসী।

    শহরের মধ্যে উঁচু এলাকা হিসেবে পরিচিত নন্দনকাননের সড়কেও জমেছে পানি।
    চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অধীন পাহাড়তলীর ১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ডের ঝর্নাপাড়ার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন আক্ষেপ করে বললেন, ‘আমরা তো গলা পর্যন্ত ডুবছি! আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কি মাথাসহ ডুবে যাবে? প্রশ্ন রেখে গেলাম? কার কাছে ! সত্যিই জানিনা।

    পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানাচ্ছে, রোববার (৬ আগস্ট) সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় ২১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

    সহসা কমছে না এই বৃষ্টি। উত্তরপূর্ব মধ্যপ্রদেশ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি দুর্বল ও লঘুচাপে পরিণত হয়ে মৌসুমি বায়ুর অক্ষের সাথে মিলিত হয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
    বর্ষা মৌসুমের ভারী বর্ষণের প্রথম ধাক্কাটা এসেছিল বুধবার (২ আগস্ট)। এরপর থেমে থেমে বৃষ্টি। সর্বশেষ গত তিনদিন ধরে টানা বৃষ্টিতে নগরের অধিকাংশ এলাকা হয়ে গেছে জলমগ্ন। নগরের চকবাজার, দেওয়ান বাজার, খলিফাপট্টি, মুরাদপুর, ২ নম্বর গেইট, বহদ্দারহাট, বাদুরতলা, শুলকবহর, মোহাম্মদপুর, কাপাসগোলা, কাতালগঞ্জ, বাকলিয়া, ফিরিঙ্গিবাজার, চান্দগাঁও, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, তিন পুলের মাথা, রিয়াজুদ্দিন বাজার, মুরাদপুর, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ, কালারপোল, বড়পোল, হালিশহরসহ বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।  

    সড়ক থেকে অলিগলি তলিয়ে গেছে হাঁটু থেকে কোমর সমান পানিতে। দোকানপাট ও বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকে যাওয়ায় নষ্ট হচ্ছে আসবাবপত্র। জ্বলছে না রান্নার চুলা। এর মধ্যে বিভিন্ন বেসরকারি অফিস, শিল্প ও কলকারখানা খোলা থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন চাকরিজীবীরা। বাড়তি ভাড়া দাবি করছে রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশা চালকরা। উন্মুক্ত নালা ও ফুটপাতের ভাঙা স্ল্যাব পথচারীদের জন্য ঝুঁকি বাড়িয়েছে।

    চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী এ অবস্থার জন্য দায়ী করেছেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (চউক)। তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে চউক এর মেগা প্রকল্পে চসিকের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। যে ওয়ার্ডে তারা কাজ করবে, সেই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা তাদের ইচ্ছেমত কাজ করছে। শুধু খালের দুই পাড়ে ওয়াল দিলে হবে না। খাল থেকে মাটি তুলতে হবে। চান্দগাঁও ও বাকলিয়াসহ আশেপাশের এলাকায় খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি যেতে পারছে না। চাক্তাই খাল ও বীর্জা খালসহ অন্যান্য খালগুলো পরিষ্কার করতে হবে। মাটি উত্তোলন করা না হলে প্রকল্পের সাফল্য আসবে না।

    তবে এ দায় নিতে নারাজ চউক। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, চসিক নালা–নর্দমাগুলো পরিষ্কার করেনি। নতুন খাল খনন করতে পারেনি। ফলে নগরে ড্রেনেজ ব্যবস্থা অকার্যকর। এজন্যই জলাবদ্ধতা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
    প্রকাশিত রবিবার ০৬ (আগস্ট) ২০২৩