• সর্বশেষ আপডেট

    ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতে শুরু হওয়া সংঘর্ষ থামে পরদিন দুপুরে, আহত ৩০

     


    ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের দুর্গাপুরে তুচ্ছ ঘটনার জেরে দুই দল গ্রামবাসীর দফায়-দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ও শনিবার সকালে এসব ঘটনা ঘটে। রাতে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষ শেষ হয় পরদিন দুপুরে। সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের বেশকিছু বাড়িঘর-দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে টিয়ারশেল ও শর্টগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

     


    পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, শুক্রবার রাতে উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের ‘বার ঘরিয়া’ গোষ্ঠীর বাড়িতে ওয়াজ মাহফিল হয়। এটিকে কেন্দ্র করে রাস্তার ওপর কিছু ভাসমান দোকানপাট বসেছিল। এ সময় রাস্তা দিয়ে এলাকার জারুমিয়া বাড়ির রুহুল আমনি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে যাওয়ার সময় অটোরিকশাটি ‘বার ঘরিয়া’ গোষ্ঠীর একজনের গায়ে লাগে। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে ‘বার ঘরিয়া’ গোষ্ঠীর লোকজন রুহুল আমীনকে মারধর ও অটোরিকশাটির গ্লাস ভাঙচুর করে। পরে তিনি বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি নিজদের ‘জারুর গোষ্ঠীর’ লোকজনকে জানান। পরে তার গোষ্ঠীর লোকজন রাস্তায় দাঁড়িয়ে ‘বার ঘরিয়ার’ দুই অটোরিকশা আটক করে।

    এদিকে বিষয়টি সমাধানের জন্য দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাসলে মিয়া তার পরিষদের মেম্বার ‘বার ঘরিয়া’ গোষ্ঠীর মিজান মিয়াকে বাড়ি থেকে ডেকে আনেন। মিজান মেম্বার চেয়ারম্যানের বাড়িতে গেলে চেয়ারম্যানের সামনেই ‘জারুর গোষ্ঠীর’ লোকজন তাকে পিটিয়ে আহত করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রতিপক্ষ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে। পরে ‘জারুর গোষ্ঠীর’ লোকজনও পাল্টা হামলা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে  পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

    এদিকে, রাতের ঘটনার জেরে শনিবার বেলা ১১টার দিকে উভয় গোষ্ঠীর লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পুনরায়  সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। প্রায় দুই ঘণ্টার সংঘর্ষে দুর্গাপুর  গ্রামের অন্যান্য গোষ্ঠীর লোকজনও সংঘর্ষে লিপ্ত হন।

    খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে টিয়ারশেল ও শর্টগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে  উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হন।

    ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মিজান মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুক্রবার রাতে ঘটনা মীমাংসার কথা বলে চেয়ারম্যান আমাকে তার বাড়িতে ডেকে নেন। তার সামনেই লোকজন আমাকে পিটিয়ে আহত করে।’

    এ বিষয়ে দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাসলে মিয়া বলেন, ‘শুক্রবার রাতে ঘটনার জেরে শনিবার সকালে আবারও সংঘর্ষ হয়েছে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে।’

    এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সি বলেন, ‘স্থানীয় সর্দার-মাতব্বরদের নিয়ে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

    এ বিষয়ে আশুগঞ্জ থানার ওসি আজাদ রহমান বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরবর্তী সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

    প্রকাশিত শনিবার ১৪ জানুয়ারি ২০২৩