• সর্বশেষ আপডেট

    ঘূর্ণিঝড় আম্ফান’ পরবর্তী জরুরী উদ্ধার, ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তায় প্রস্তুত সশস্ত্র বাহিনী

    সহায়তায় প্রস্তুত সশস্ত্র বাহিনী


    ঢাকা, ১৯ মে ২০২০ ঃ  ঘূর্ণিঝড় আম্পাং পরবর্তী দুর্যোগ মোকাবেলায় সশস্ত্র বাহিনীর বিভাগের নেতৃত্বে সেনা নৌ ও বিমান বাহিনী সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে । সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ,দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ,ও অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সাথে যোগাযোগ রাখছে ।

    বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বেসামরিক প্রশাসনের সাথে দুর্যোগ পূর্ববর্তী ও দুর্যোগ পরবর্তী কার্যক্রমের সমন্বয় ইতিমধ্যে করেছে । নিজস্ব উৎস থেকে ১৮,৪০০ টি ত্রাণের প্যাকেট তৈরি করেছে এবং ৭১ টি ছোট মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে ।
    ১৪৫ টি ছোট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা টিম বিশেষ সরঞ্জামাদিসহ সংক্ষিপ্ত নোটিশে মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে । ভূমিধস বিষয়ে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বিশেষ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা টিম বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের রক্ষায় কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে । বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং উপকরণ যেমন , ৩১৩ টি স্পিডবোট, পনেরোটি পানি বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্ট , ২৩৯ আউট বোর্ড মোটর ,চারটি জাপানিস উদ্ধার বোর্ড ,৬ টি ফাইবার গ্লাস বোর্ড ,১১৫ টি শার্ক বোর্ড , এবং ২টি Landing Craft Utility /Landing Craft Vehicle প্রস্তুত রয়েছে। আর্মি এভিয়েশন উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণ এর জন্য প্রস্তুত রয়েছেন ।

    ঘুর্ণিঝড় আম্ফান’ পরবর্তী জরুরী উদ্ধার, ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তাসহ যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় তিনস্তরের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম, খুলনা ও মংলা নৌঅঞ্চলে নৌবাহিনীর ২৫টি জাহাজ সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় দ্রুততম সময়ে জরুরী উদ্ধার, ত্রাণ এবং চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, ঘুর্ণিঝড় পরবর্তী সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় অনুসন্ধান কাজের জন্য নৌবাহিনীর দুটি মেরিটাইম পেট্রোল এয়ার ক্রাফট এবং দুটি হেলিকপ্টার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। সেইসাথে খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুরসহ উপকূলীয় দূর্গত এলাকাগুলোতে মোতায়েনের জন্য নৌ কন্টিনজেন্ট প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

    ঘুর্ণিঝড় পরবর্তী সমুদ্র ও উপকূলীয় উপদ্রুত এলাকায় উদ্ধার অভিযান পরিচালনার জন্য প্রথমে নৌবাহিনীর দুটি মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট ও দুটি হেলিকপ্টারের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নৌবাহিনী জাহাজসমূহ উদ্ধার তৎপরতা ও ত্রাণ সহায়তা কার্য পরিচালনা করবে। প্রাথমিকভাবে এ উদ্ধার কাজের জন্য বানৌজা সমুদ্রজয় ও সমুদ্র অভিযান কক্সবাজার ও তৎসংলগ্ন এলাকায়, বানৌজা গোমতি মংলা ও তৎসংলগ্ন সাগর তীরবর্তী এলাকায় নিয়োজিত থাকবে। অন্যদিকে বানৌজা সুরভি চট্টগ্রামের বহিঃনোঙ্গর থেকে মহেশখালি এলাকায়, বানৌজা বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা, প্রত্যয়, সংগ্রাম ও প্রত্যাশা বহিঃনোঙ্গর থেকে চট্টগ্রামের পোতাশ্রয় এলাকায়, বানৌজা দূর্জয়, নির্মূল ও শাপলা চট্টগ্রামের উপকূলীয় এলাকায়, বানৌজা অতন্দ্র সন্দ¡ীপ ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায়, বানৌজা অপরাজেয় হাতিয়া এলাকায় নিয়োজিত থাকবে।

    এছাড়া রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে কাপ্তাই নৌঘাটি বানৌজা শহীদ মোয়াজ্জম হতে বোট নিয়োজিত থাকবে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, নোয়াখালি, ফেনী ও লক্ষিপুরে নৌবাহিনীর এলসিইউ-০১ এবং এলসিইউ-০২, বরিশাল ও আশেপাশের এলাকায় বানৌজা হাতিয়া, সন্দ¡ীপ, শাহ পরাণ এবং শাহ মখদুম, বরগুনা, বরিশাল, সাতক্ষিরা ও ঝালকাঠির অভ্যন্তরীণ রুটে নৌবাহিনীর এলসিটি-১০৪ এবং এলসিটি-১০৫ এবং কর্নফুলী চ্যানেলে বানৌজা খাদেম নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া পরিস্থিতি বিবেচনায় দুর্গত এলাকাগুলোতে জরুরী চিকিৎসা সহায়তার জন্য বিশেষ মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। যারা ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় জীবন রক্ষাকারী ঔষধ, স্যালাইন ও অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত থাকবে।

    ঘূর্ণিঝড়ের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে উপকূলীয় অঞ্চলের জনগনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে খুলনা নৌঅঞ্চলের দুটি জাহাজ সাতক্ষিরা ও দুবলার চর গমনের উদ্দেশ্যে খুলনা নৌ জেটি ত্যাগ করেছে। সেইসাথে সড়কপথে ৫ সদস্যের একটি মেডিকেল টিমসহ ২৪ জন নৌসদস্যের একটি টিম দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার কার্যে সহায়তার জন্য সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে গমন করেছে। এছাড়া বরিশাল, বরগুনা ও পটুয়াখালীতে টহলরত তিনটি জাহাজকে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী প্রাথমিক রেসপ›স জাহাজ হিসেবে প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। ঝড়ের তীব্রতা ও আঘাতের প্রকোপ পর্যবেক্ষণের পর নৌবাহিনীর আরও পাঁচটি জাহাজ বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলায় ত্রাণ সহায়তা প্রদানের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

    বিমান বাহিনীর সকল এয়ারক্রাফট ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ চিকিৎসা ও উদ্ধার অভিযানের জন্য প্রস্তুত রয়েছে । বিমান বাহিনীর এয়ারক্রাফট গুলোর মধ্যে রয়েছে ৬টি পরিবহন বিমান ও ২২টি হেলিকপ্টার


    প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৯ মে, ২০২০